আরফাত বিপ্লব, লোহাগাড়া (চট্টগ্রাম) : কিছুতেই থামছে না সাইফুল ইসলাম প্রকাশ শাহাব উদ্দিনের মায়ের আহাজারি। সড়ক দূর্ঘটনায় ছেলে ও নাতিকে হারিয়ে সাইফুল ইসলামের মা নুর জাহান বেগমের কান্নায় আকাশ-বাতাশ ভারি হয়ে উঠছে। তার কান্নায় চোখ ভিজে উঠছে সাইফুল ইসলামের স্বজন ও সমবেদনা জানাতে আসা মানুষদেরও।
রবিবার সন্ধ্যায় সাইফুল ইসলামের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল ছেলে সাইফুল ইসলাম (৪০) ও নাতি জাভেদকে (১২) হারিয়ে ঘরের সামনে বসে আহাজারি করছেন নুর জাহান বেগম।
‘তোরা আঁর পোয়া সাবুদ্দিনরে আনি দে, আঁর নাতি জাভেদরে আনি দে। নইলে আরে তোরা হন হালত লই যাই ফেলাই দে, আই আর থাকিত ন পারির।’ (তোমরা আমার ছেলে শাহাব উদ্দিনকে এনে দাও, আমার নাতি জাভেদকে এনে দাও। না হলে আমাকে নিয়ে কোন খালে ফেলে দাও, আমি আর থাকতে পারছি না।) এমন বিলাপ করতে করতে কাঁদতে থাকেন তিনি।
চন্দনাইশে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে বাস-মোটরসাইকেল মুখোমুখি সংঘর্ষে সাইফুল ইসলাম প্রকাশ শাহাব উদ্দিদন ও তার ৬ষ্ঠ শ্রেণি পড়–য়া ছেলে জাভেদ (১৪) মারা যায় এবং স্ত্রী ডলি আক্তার (৩০) গুরুতর আহত হয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। সাইফুল ইসলাম পূর্ব লোহাগাড়ার হাজি পাড়া এলাকার মৃত আবদুল বারেকের পুত্র। রবিবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে দোহাজারী পৌরসভার পাঠানীপুল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহতের ছোট ভাই দেলোয়ার হোসেন জানান, সাইফুল ইসলাম চট্টগ্রাম নগরীতে একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ছিলেন। স্ত্রী ও দুই পুত্র নিয়ে নগরীর অক্সিজেন এলাকার সৈয়দ পাড়ায় ভাড়া বাসায় থাকতেন। ঘটনার দিন স্ত্রী ও ছোট ছেলে জাভেদকে নিয়ে মোটরসাইকেল যোগে (চট্টমেট্টো-হ-১৭-২১১১) চট্টগ্রাম থেকে অসুস্থ মাকে দেখতে গ্রামের বাড়ি যাচ্ছিলেন। দোহাজারী পৌঁছলে পৌরসভার পাঠানীপুল এলাকায় একটি পিকআপকে ওভারটেক করতে গিয়ে চট্টগ্রামগামী হানিফ পরিবহনের (ঢাকা মেট্টো-ব-১৪-৩৫৬৯) সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটে। এতে ঘটনাস্থলে পিতা-পুত্র মারা যায়। স্ত্রী ডলি আক্তার মুমূর্ষ অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
দোহাজারী হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ ইয়াসিন আরাফাত বলেন, দ‚র্ঘটনার সংবাদ পেয়ে হাইওয়ে পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থল থেকে দ‚র্ঘটনা কবলিত বাস ও মোটরসাইকেল উদ্ধার করে। পিতা-পুত্রের লাশ আইনগত প্রক্রিয়া শেষে স্বজনদের নিকট হস্তান্তর করা হয়।