তৌহিদ চৌধুরী প্রদীপ, সুনামগঞ্জ : সুনামগঞ্জে পৃথক তিনটি চাঞ্চল্যকর ধর্ষণ মামলায় প্রত্যেককে ১ লক্ষ টাকা জনিমানাসহ ৫ জনের যাবজ্জীবন ও ১ জনের ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং অপর আরেকজনকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানাসহ ৫ বছরের কারাদন্ড প্রদান করেছে বিজ্ঞ আদালত।
বৃহস্পতিবার দুপুরে আলোচিত এই তিন মামলার রায় প্রদান করেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালের বিচারক জাকির হোসেন ।
জানা যায়, ২০১২ সালের ৩১ আগস্ট বিশ্বম্ভরপুর দিগেন্দ্র বর্মন ডিগ্রী কলেজের এক ছাত্রীকে বাড়ি যাওয়ার পথে তুলে নিয়ে শাহ আরেফিন মোকামের পাশে আখক্ষেতে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে প্রেমিক আনোয়ার হুসেন খোকন। এ সময় আনোয়ার হোসেনকে বেঁধে কলেজযাত্রীকে গণধর্ষণ করে এলাকার কয়েকজন যুবক। এই ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করেন নির্যাতিতা কলেজ ছাত্রী।
দীর্ঘদিন মামলার বিচার কার্য শেষে আলোচিত এই ঘটনায় বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার মল্লিকপুর গ্রামের আলীনূরের ছেলে আনোয়ার হোসেন, আব্দুর রশীদের ছেলে শফিউল্লাহ, জাবেদ মিয়ার ছেলে সাইদুর রহমান, আব্দুল মজিদের ছেলে শফিকুল ইসলামকে দোষী সাবস্ত করে চার জনকে ১ লাখ টাকা জরিমানাসহ যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করে আদালত।
অপর দিকে, ২০১২ সালের ১৭ মার্চ ছাতক উপজেলার এক কিশোরীকে বসতঘর থেকে অপহরণ করে সিলেট নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে এলাকার মশাহিদ আলীর ছেলে ইকবাল হোসেন। এই ঘটনায় দোষী সাবস্ত করে ইকবালকে ১ লাখ টাকা জরিমানাসহ যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং অপহরণের দায়ে ইকবাল হোসেন ও তার সহযোগি জয়নাল আবেদীন কে ১৮ বছর সশ্রম কারাদণ্ড এবং ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ৩ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রধান করে আদালত।
এ ছাড়াও ২০২০ সালের ২৬ ডিসেম্বর দিরাইগামী চলন্ত বাসে ধর্ষণচেষ্টা মামলায় বাসচালক শহিদ মিয়াকে ৫ বছরের কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা প্রদান করেছে আদালত। শহিদ মিয়া সিলেট জালাবাদ থানার মোল্লারগাঁয়ের মৃত তৌফিক মিয়ার ছেলে। এই ঘটনায় বাসের হেল্পার রশিদ আহমদকে মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়েছে আদালত।
মামলার রায়ে রাষ্ট্রপক্ষ সন্তুষ্ট প্রকাশ করে নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালের পিপি নান্টু রায় বলেন, রায়ের মাধ্যমে দোষীরা আইনের আওতায় এসেছে। নির্যাতিতরা সুবিচার পেয়েছে। আদালতের এই রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। তবে রায়ে অসুন্তুষ্ট প্রকাশ করে রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করার কথা জানিয়েছেন আসামী পক্ষের আইনজীবী ও স্বজনরা।