সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি : সুনামগঞ্জের দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার বীরগাও গ্রামে এক ভাইয়ের সামনে তার চিকিৎসক বোনকে জোর করে তুলে নিয়ে ধর্ষণ চেষ্টাসহ ছিনতাইয়ের ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সুপারিশের অভিযোগ পুলিশ আমলে না নেওয়ায় চিকৎসক বোনের ইজ্জত বাচাঁতে সন্ত্রসীদের ভয়ে গ্রাম ছেড়েছে ভাইবোন।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার পূর্ববীরগাঁও ইউনিয়নের বীরগাঁও গ্রামের বাসিন্দা আরিফ আহমেদ হিমেলের ছোট বোন একজন চিকিৎসক (ডি.এম.এফ. ঢাকা) । তিনি দীর্ঘদিন যাবত স্থানীয় বীরগাও বাজারে নিজস্ব চেম্বারে প্রতিদিন এলাকার মানুষকে চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছিলেন।

সে প্রতিদিন সকাল ১০টার দিকে বাড়ি থেকে বের হয়ে তার চেম্বারে যান। রোগী দেখে প্রতিদিন রাত ৯টার দিকে ভাই হিমেল তার চিকিৎসক বোনকে নিয়ে বাড়িতে ফিরেন। এরই ধারা বাহিকতায় প্রতিদিনের ন্যায় চিকিৎসক বোন ভাই হিমেলের সাথে প্রতিদিন নিয়মিত চেম্বারে যাওয়া আসা করেন। এলাকার এক বখাটে ছেলে রোগী সেজে চিকিৎসার নাম করে চিকিৎসকের ক্ষতি সাধন করার জন্য পিছু নেয়। তার নাম জুনেল আহমদ সে একই গ্রামের মৃত জয়নাল আবেদীনের ছেলে। বখাটে জুনেল প্রতিদিন যাওয়া-আসার সময় চিকিৎসক নারীকে দেখলেই বিভিন্ন ভাবে অশ্লীল ভাষায় ও অশালীন অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে উত্যক্ত করতে থাকে ।

গত ২৩ নভেম্বর সকাল ১১টার দিকে ওই চিকিৎসক তার চেম্বারে যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বের হয়ে যাওয়ার পথে বখাটে জুনেল একা পেয়ে রাস্তা রোধ করে তার গায়ের ওড়না নিয়ে যায়। এ সময় ওই নারী চিকিৎসকের চিৎকার শুনে আশপাশের মানুষ আসতে থাকলে সন্ত্রাসী জুনেল পালিয়ে যাবার সময় অপহরণ করে তুলে নিয়ে ধর্ষণ করে প্রাণে হত্যার হুমকি দিয়ে যায়। সঙ্গে সঙ্গে তার ভাই আরিফ আহমদ হিমেলকে ফোনের মাধ্যমে বিষয়টি অবগত করেন।

ঘটনার দিন রাত ৯টার দিকে ওই চিকিৎসক বোনকে চেম্বার থেকে তার ভাই হিমেল বাড়ি ফেরার পথে সন্ত্রাসী জুনেলের নেতৃত্বে তার আরো ৫ জন অজ্ঞাতনামা সহযোগি তিনটি মোটর সাইকেলযোগে তাদের রাস্তা অবরোধ করে। বোন ডাক্তারকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়ার জন্য তার হাত ধরে টানা-হেঁচরা শুরু করে। এ সময় ভাই হিমেল বোনকে উদ্ধারের চেষ্টাকালে সন্ত্রাসীরা বোনের ব্যাগে থাকা নগদ ৫ হাজার টাকা, তার গলায় থাকা একটি স্বর্ণের চেইন, কানের দুল ছিনিয়ে নিয়ে যায় । এ সময় সন্ত্রাসীরা ভাই ও বোনকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে। সন্ত্রাসীরা এ সময় চিকিৎসক বোনকে অপহরণ করার চেষ্টাকালে বিপরীতদিক থেকে আসা গাড়ির শব্দ শুনে পালিয়ে যাওয়ার সময় সন্ত্রাসীরা বোনকে হত্যা করার হুমকি দিয়ে যায়।

বিষয়টি স্থানীয় এলাকার পঞ্চায়েতদের কাছে ওই চিকৎসক বিচার প্রার্থী হন । কোন বিচার না পেয়ে মেয়ের ভাই হিমেল গত ২৫ নভেম্বর দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা নিবার্হী অফিসার জেবুন নেহান শাম্মী বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন । তাৎক্ষণিক নিবার্হী অফিসার বিষটি দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দক্ষিণ সুনামগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জকে লিখিতভাবে সুপারিশ করেন। কিন্তু থানা পুলিশ বিষটিকে কোনো গুরুত্ব না দেওয়ায় সন্ত্রসীদের হুমকির মুখে পরে বোনের প্রাণ রক্ষা করার জন্য নিজের বসতবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।

এদিকে নিরাপত্তার ভয়ে এই চিকিৎসক চেম্বারে যেতে না পারায় ভাইবোন পালিয়ে থেকে মানবেতর জীবন যাপন করছেন বলে ভাই হিমেল গণমাধ্যমকর্মীদের মোবাইল ফোনে জানান। কবে শংঙ্কামুক্ত হয়ে নিজ বাড়িতে ফিরতে পারবেন সেটা অনিশ্চিত? তারা দ্রুত সময়ের মধ্যে সন্ত্রসীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পরিকল্পনামন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করে সন্ত্রাসীদের হাত থেকে তাদের রক্ষা করতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার প্রতি আহ্বান জানান মেয়েটির পরিবার।