সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন। ছবি: ইন্টারনেট
খোলাবার্তা২৪ ডেস্ক : সীমান্তে হত্যাকাণ্ডের মতো ঘটনাগুলো কলঙ্ক তৈরি করছে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশি, আমাদেরও হতাশ করে। তবে আমরা বিশ্বাস করি, আলোচনার মাধ্যমে এটির সমাধান করা সম্ভব। আমরা অনেক দূর অগ্রসর হয়েছি। ভারতের প্রধানমন্ত্রী অঙ্গীকার করেছেন- ‘কোনও প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করা হবে না।’ আমরা তার কথা বিশ্বাস করতে চাই। আমরা চাই না একজন লোকও সীমান্তে মারা যাক; কিন্তু দুঃখজনক, এ ধরনের ঘটনা প্রায়ই ঘটছে। দুই দেশের মধ্যে সুন্দর সম্পর্ক। কিন্তু সীমান্ত হত্যাকান্ড সম্পর্কে কলঙ্ক তৈরি করছে।’
বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মাঝে ভার্চুয়াল আলোচনার পর সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘ভারতের প্রধানমন্ত্রী নিজেই বলেছেন- প্রাণঘাতী নয় (নন-লিথেল) এমন অস্ত্র ব্যবহার হবে।’
তিস্তা চুক্তি নিয়ে কথা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বিষয়টি আমরা তুলেছি। তিস্তা নিয়ে আগে থেকেই ভারতের সরকার রাজি হয়ে আছে, কিন্তু বাস্তবায়ন হয়নি। আমরা বলেছি, তিস্তা ইস্যু তুলে আপনাদের লজ্জিত করতে চাই না। তবে এটি আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। একইসঙ্গে আমরা বাকি ছয়টি নদীর কথা জিজ্ঞাসা করেছি। তারা একলাইনে উত্তর দিয়েছেন। তিস্তা নিয়ে তারা বলেছেন, তারা সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে কাজ করার জন্য আলোচনা করছেন।’
রোহিঙ্গা নিয়ে ভারতের চিন্তা কী জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তারা বলেছেন, এর দ্রুত সমাধান হওয়া দরকার। কারণ, না হলে এই এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড দেখা দিতে পারে। সেজন্য এ বিষয়ে যা যা করা দরকার, তারা আমাদের সঙ্গে মিলে করবে। এটাও বলেছে যে একমাত্র সমাধান হচ্ছে তাদের ফেরত যাওয়া।’
ভারত কী চেয়েছে জানতে চাইলে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘ভালো সম্পর্ক বলে তারাও অনেক কিছু পেয়েছে। তাদের পূর্ব সীমান্তে কোনও ঝামেলা নেই এবং এর থেকে বড় কিছু পাওয়ার আছে? কানেক্টিভিটির কারণে তাদের ও আমাদের জিনিস বিক্রি হয় এবং এটি খুব ভালো। কানাডা ও আমেরিকার মধ্যে সম্পর্ক ভালো হওয়ার কারণে ব্যবসা তুঙ্গে এবং আমরাও চেষ্টা করছি। আমাদের লোকজন সেখানে (ভারতে) স্বাস্থ্যসেবা নেওয়ার জন্য যায়। আবার তাদের অনেক লোক এখানে চাকরির জন্য আসে। এটি আমরা বলেছি।’
মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা উন্নয়ন চাই। স্থিতিশীলতা না থাকলে সেটি অর্জন করা যাবে না। ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো হওয়ায় এই স্থিতিশীলতা আছে। এর ফলে আমাদের লক্ষ্যগুলো আমরা সহজে অর্জন করতে পারি। বিদেশিরা তখনই বিনিয়োগ করবে, যখন তারা দেখবেন এখানে স্থিতিশীলতা আছে।’
তিনি জানান, আজকের বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ভারত-মিয়ানমার-থাইল্যান্ড রোড নেটওয়ার্কে যোগ দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়। কারণ, এই রোড নেটওয়ার্কটি কৌশলগত কারণে গুরুত্বপূর্ণ। অপরদিকে ভারতের পক্ষে ব্রিকস (ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকা) নতুন যে ব্যাংকটি করেছে, সেখানে যোগ দেওয়ার জন্য বাংলাদেশকে অনুরোধ করেছে।