এসএমইদের নিকট থেকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ পণ্য বা সেবা ক্রয়ের জন্য পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইনে কোটা ব্যবস্থা অর্ন্তভুন্তির উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন এমপি। তিনি বলেন, এর ফলে এসএমই উদ্যোক্তারা লাভবান হবেন এবং অর্থনীতিতে এখাত গুরুত্বর্পূণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে।
আজ এসএমই উদ্যোক্তাদের তৈরিকৃত দেশীয় পণ্য ব্যবহারে ক্রেতাদের উদ্বুদ্ধকরণের লক্ষ্যে এসএমই ফাউন্ডেশন কর্তৃক অনলাইন সোস্যাল ক্যাম্পেইন কর্মসূচীর উদ্বোধন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তৃতায় শিল্পমন্ত্রী একথা বলেন। ফাউন্ডেশনের চেয়ারপার্সন অধ্যাপক ড. মোঃ মাসুদুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এমপি।
শিল্পমন্ত্রী বলেন, র্বতমান করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় ব্যাংক ঋণের র্শতসমূহ শিথিল করে সিএমএসএমই উদ্যোক্তাদের জন্য প্রণোদনার ঋণ বিতরণ গতিশীল করতে হবে। তিনি বলেন, গ্রাম পর্যায়ের উদ্যোক্তাদের এগিয়ে আনার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার আলোকে শিল্প মন্ত্রণালয় কাজ করছে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে উৎপাদিত পণ্যের মার্কেটিং ব্যবস্থা শক্তিশালী করা হচ্ছে। ছোট উদ্যোক্তারাই অর্থনীতির সফলতা নিয়ে আসবেন এমন আশা প্রকাশ করে শিল্পমন্ত্রী বলেন, দেশে ও বিদেশে দেশীয় পণ্যের বাজার সম্প্রসারিত করার লক্ষ্যে শিল্প মন্ত্রণালয় ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় যৌথভাবে কাজ করছে। তিনি আরও বলেন, সরকারের সমন্বিত উদ্যোগের ফলে করোনা পরিস্থিতির মাঝেও শিল্পখাতে নিরবচ্ছিন্ন সাপ্লাই চেইন অব্যাহত রয়েছে। মুক্তবাজার অর্থনীতিতে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে নতুন ও আধুনিক প্রযুক্তি আয়ত্ব করার পাশাপাশি দেশী ও আন্তর্জাতিক ভোক্তাদের চাহিদা অনুযায়ী পণ্যের গুণগত মান উন্নত করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন শিল্পমন্ত্রী।
বিশেষ অতিথির বকৃতায় বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, করোনা পরিস্থিতি দেশীয় পণ্য আরও বেশি হারে ব্যবহারের সুযোগ সৃষ্টি করেছে। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বেশি বেশি দেশীয় পণ্য ব্যবহার করে দেশপ্রেমের বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে হবে। ঐতিহ্যবাহী মসলিন শাড়ির প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, উঁচুমানের রুচিসম্পন্ন পণ্য তৈরীর মানসিকতা ও শৈল্পিক সক্ষমতা আমাদের রয়েছে। এ সক্ষমতাকে পুরোপুরি কাজে লাগিয়ে বিশ্ব মানের পণ্য উৎপাদনে উদ্যোক্তাদের পরামর্শ দেন বাণিজ্যমন্ত্রী। বাণিজ্যমন্ত্রী বিদেশে দেশীয় পণ্যের বাজার সম্প্রসারণে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও এক্সপোর্ট প্রমোশন ব্যুরোর পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন।
অনুষ্ঠানের সভাপতি এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপার্সন অধ্যাপক ড. মোঃ মাসুদুর রহমান বলেন, দেশী ফ্যাশন ডিজাইনাররা বছরে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকার পণ্য উৎপাদন করেন। সরকারি কেনাকাটায় এসএমই উদ্যোক্তাদের কাছ থেকে পণ্য ক্রয়ের জন্য কোটা নির্ধারণ করা হলে দেশী পণ্যের ব্যবহার বৃদ্ধিতে সেটি যুগান্তকারী ভূমিকা রাখবে। এছাড়া, সাদাকালোর স্বত্বাধিকারী আজহারুল হক আজাদ দেশীয় এসএমই পণ্য ক্রয় উৎসাহিত করতে গৃহীত সোশ্যাল ক্যাম্পেইন কর্মসূচির ওপর উপস্থাপনা করেন এবং নারী উদ্যোক্তা তানিয়া ওহাব ও ইসরাত জাহান চৌধুরী অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।
উল্লেখ্য, দেশীয় পণ্য ব্যবহারে সাধারণ মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতে এসএমই ফাউন্ডেশন সোস্যাল ক্যাম্পেইন কর্মসূচীর অংশ হিসেবে প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক, অনলাইন ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্ধৃতি ও দেশীয় পণ্য ব্যবহারে উদ্বুদ্ধকরণ বিষয়ক স্লোগানসহ ২৫টি শ্লোগান তৈরি করা হয়েছে। সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চিঠি এবং ইমেইলে এসব শ্লোগানের মাধ্যমে বার্তা প্রেরণ করে সচেতনতা তৈরি করা হবে। এছাড়া, বিভিন্ন সেক্টরের এসএমই পণ্যের ছবিসহ প্রচারপত্র, উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান ও বিশেষ অতিথির বক্তব্যের ভিডিও ক্লিপিংস্ তৈরি করে ফেসবুক, ওয়েবসাইট, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় প্রচার করা হবে। দৈনিক পত্রিকায় দেশী পণ্য ক্রয়ের জন্য উদ্বুদ্ধকরণ বিষয়ক ফিচার প্রকাশ, টকশো আয়োজন, জনগণের নিকট মোবাইল এসএমএস’র প্রেরণ, সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান কর্তৃক স্থানীয় পণ্য ব্যবহার করার জন্য উদ্বুদ্ধকরণ বিষয়ক কর্মসূচি গ্রহণসহ অন্যান্য কার্যক্রম বাস্তবায়ন করবে এসএমই ফাউন্ডেশন। – বিজ্ঞপ্তি