খোলাবার্তা২৪ ডেস্ক : সয়াবিন তেল নিয়ে দেশে গত কয়েক দিন ধরে তেলেসমাতি কারবার চলছে। তেলের বাড়তি দাম নিয়ে গত ১৫ দিনে আনুমানিক প্রায় ১০০০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
দেশের বাজারে সয়াবিন তেলের সরবরাহ হঠাৎ করেই কমে গেছে। এই অভিযোগ তুলে খুচরা এবং পাইকারি বাজারে তেলের বেশি দাম নেয়া হয় দুই সপ্তাহ ধরে। বাজারে তেলের কৃত্রিম সংকট তৈরি করা হয়েছে। এমন অভিযোগও উঠেছে।
গতকাল বুধবার ঢাকায় ভোজ্য তেলকল মালিক এবং ডিলারদের নিয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের এক বৈঠক থেকে বলা হয়েছে, তেলের দাম বৃদ্ধি এবং সরবরাহের সংকট সৃষ্টির সাথে জড়িতদের চিহ্নিত করা হবে।
এ ছাড়াও কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের টিম আজ বৃহস্পতিবার থেকে তেল মিলগুলোতে গিয়ে সয়াবিন তেলের সরবরাহ নিশ্চিত করবে।
একই সাথে মিল মালিকদের দেয়া তিন মাসের সরবরাহের তথ্য ঐ টিম যাচাই করে দেখবে।
এই পরিস্থিতিতে বুধবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এবং জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ. এইচ. এম. সফিকুজ্জামানের নেতৃত্বে ভোজ্য তেল মিল মালিক ও ডিলারদের নিয়ে জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
ওই বৈঠকে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক তথ্য দিয়েছেন যে, তেলের বাড়তি দাম নিয়ে গত ১৫ দিনে প্রায় এক হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, প্রতিদিনের ভোজ্য তেলের চাহিদার সাথে তুলনা করে তারা অনুমানিক এই পরিসংখ্যান পেয়েছেন।
তিনি বলেন, প্রতিদিন যদি ৫০০০ টন ভোজ্য তেলে চাহিদা থাকে, তাতে লিটারে ১০ টাকা করে বাড়লে মোট অংকটা অনেক বড় হয়। এভাবে আনুমানিক একটা পরিসংখ্যান আমরা দিয়েছি।
বাজারে এই পরিস্থিতি কারা সৃষ্টি করেছে- তাদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে ঐ বৈঠকে।
তবে কিছু ডিলার এবং অসাধু ব্যবসায়ী মিলে এই সংকট সৃষ্টি করেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, অসাধু চক্র এটা করেছে। কয়েকটা পর্যায় থেকে এই পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছে। এরমধ্যে যারা ডিলার, তাদেরও কেউ কেউ এখানে জড়িত। আবার পাইকারি পর্যায়ে জড়িত। আমরা আগে মিলগুলোর সরবরাহের তথ্য যাচাই করে তারপর সুনির্দিষ্ট ডিলারদের চিহ্নিত করবো। এরপর সরবরাহের তেল কোথায় গেছে-তাও বের করবো।
এদিকে ওই বৈঠকে মিল মালিকদের প্রতিনিধি যারা উপস্থিত ছিলেন, তাদের মধ্যে মেঘনা গ্রুপের উপ-উপদেষ্টা মোহাম্মদ শফিউর রহমান বলেছেন, তেল সরবরাহে সংকটের সাথে মিলগুলো জড়িত নয়। আমাদের সরবরাহ কখনই বন্ধ নাই।
তবে মোহাম্মদ শফিউর রহমান বলেন, আমাদের সয়াবিন তেলের একটু সমস্যা হয়েছিল। কারণ তেল নিয়ে একটা জাহাজ একটু দেরিতে এসেছিল।
তিনি আরো বলেন, কিন্তু পামওয়েল ভোজ্য তেলে ৭০ শতাংশ চাহিদা পূরণ করে থাকে। এবং আমাদের পামওয়েল সরবরাহ কখনও বন্ধ হয়নি বা কখনও এর সংকট হয়নি। ডিলাররাও সরকারের সাথে বৈঠকে এটা স্বীকার করেছে।
তিনি উল্লেখ করেন, তারা গত তিন মাসের তেল সরবরাহের যে তথ্য সরকারকে দিয়েছেন, তা সরকার যাচাই করে দেখবে। তাতে তাদের আপত্তি নেই।
