শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি : বগুড়ার শেরপুরে চোরের উৎপাত অনেক বেড়ে গেছে। গত ২০দিনে ৬টি চুরির ঘটনায় এলাকাবাসী, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিকের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
মঙ্গলবার (১৫ ডিসেম্বর) দিনগত রাতে উপজেলার ঢাকা-বগুড়া মহাসড়ক সংলগ্ন শহরের স্থানীয় বাসষ্ট্যান্ডে শেখ সুপার মার্কেটের আজাদ ট্রেডিং কর্পোরেশন ও শফিক সাইকেল পার্টস এবং নদওয়া পাড়া যমুনা রাইচ এজেন্সী নামের ৩টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চুরির ঘটনা ঘটে। এতে প্রায় সাড়ে দশ লাখ টাকার মালামাল লুটে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা।
এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীরা জানান, প্রতিদিনের মতো ব্যবসায়িক কার্যক্রম শেষে ঘটনার দিন সন্ধ্যার পর তালাবদ্ধ করে বাসায় চলে যান। বুধবার (১৬ডিসেম্বর) সকাল নয়টার দিকে দোকানে এসে দেখেন তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের শাটারে লাগানো তালাগুলো ভাঙা। পাশাপাশি শাটারও খোলা। ভেতরে প্রবেশ করেই দেখতে পান সবকিছু তছনছ অবস্থায় পড়ে আছে।
আজাদ ট্রেডিং কর্পোরেশনের সত্ত্বাধিকারী আবুল কালাম আজাদ জানান, তার দোকান থেকে ছোট-বড় মিলে মোট ৭৭টি টায়ার ও ক্যাশবাক্সের তালা ভেঙ্গে নগদ ৫ হাজার ৪০০টাকা লুটে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। সবমিলে দশ লাখ ত্রিশ হাজার টাকার মালামাল খোয়া গেছে।
অপরদিকে শফিক সাইকেল পার্টসের সত্ত্বাধিকারী শফিকুল ইসলাম বলেন, সংঘবদ্ধ দৃর্বৃত্তরা তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হানা দিয়ে মালামালগুলো তছনছ করেছে। কিন্তু কোন মালামাল খোয়া গেছে কী-না তা এই মূহুর্তে বুঝতে পারছি না। তবে ক্যাশবাক্সের তালা ভেঙে নগদ তিন হাজার টাকা লুটে নিয়েছে। আর দোকানে রাখা একটি মোটরসাইকেল নেওয়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছে বলে জানান তিনি। এসব ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা ঘটনাটি পুলিশকে অবহিত করেছেন।
অন্যদিকে, নদওয়া পাড়া যমুনা রাইচ এজেন্সির মালিক শ্রী তপন কুমার ঘোষ জানান, আমার গদিঘর থেকে নগদ ১৫ হাজার টাকা চুরি করে নিয়ে গেছে। তবে কোন চাল না থাকায় চাল নিতে পারেনি।
সোমবার (৭ ডিসেম্বর) সকাল সোয়া ৯টায় বাসষ্ট্যান্ড আহলে হাদিস মসজিদরে পার্শ্বের সিঙ্গার শো-রুম থেকে রাত্রির কোন এক সময় চোর তালা কেটে সিঙ্গার শোরুমে প্রবেশ করে ক্যাশে থাকা নগদ প্রায় ৩ লক্ষ টাকা ও ৪টি এলইডি টিভি যার মূল্য প্রায় ১ লক্ষ টাকা চুরি করে নিয়ে যায়। সকালে সিঙ্গার ব্রাঞ্চ ম্যানেজার জিকরুল হক জিকু পূর্বের ন্যায় সিঙ্গার শোরুম খুলতে এসে তালা কাটা দেখতে পেয়ে পার্শ্বের ষ্টিলের দোকানের মালিক আনিছুর রহমানকে ডেকে আনে এবং পুলিশকে খবর দেয়।
শাহবন্দেগী ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের মেম্বর ছাইদার রহমান সাকিব জানান চোরের উৎপাত বেড়ে যাওয়ায় আমরা আতঙ্কে আছি, গত ১ ডিসেম্বর হামছায়াপুর এলাকা থেকে ট্রাক থেকে ধান চুরির ঘটনা ঘটে। ১০ ডিসেম্বর নদওয়াপাড়া এলাকায় চাতাল থেকে ৬০মন ধান চোর চুরি করে নিয়ে যায়। তবে এ বিষয়ে থানায় কোন অভিযোগ করা হয়নি।
গতকাল ২৯ নভেম্বর সন্ধ্যা রাতে গোয়াল ঘরে গরুগুলি তুলে তালাবদ্ধ করে ঘুমিয়ে পরে। ৩০ নভেম্বর সোমবার ভোর বেলা গরুগুলো গোয়াল ঘড় থেকে বের করতে গিয়ে দেখতে পান গোয়াল ঘরে গরু গুলি নেই। পরে অনেক খোজাখুঁজি করেও গরুগুলোর কোন সন্ধান পাননি। চুরি হওয়া গরু ৫টির মধ্যে ১টি গাভী, ২টি বকনা গাভী, ১টি বকনা বাছুর ও ১টি ষাড় বাছুর ছিল। যার বাজার মূল্য প্রায় ৩ লক্ষ টাকা। এ ব্যাপারে গরুর মালিক ফজর আলী বাদী হয়ে শেরপুর থানায় লিখিত অভিযোগ করলে গুরুগুলো উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে থানা পুলিশ।
এ প্রসঙ্গে শেরপুর টাউন পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইন্সপেক্টর হারুনার রশিদ বলেন, খবর পেয়েই ঘটনাস্থল গিয়ে পরিদর্শন করেছি। ব্যবসায়ীরা লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। দ্রুততম সময়ের মধ্যেই এই ঘটনায় জড়িতদের চিহিৃত করে আইনের আওতায় আনা সম্ভব হবে।
এ বিষয়ে শেরপুর থানা অফিসার ইনচার্জ শহিদুল ইসলাম জানান, চুরির ঘটনা জানি, ঘটনাগুলো গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হচ্ছে। সেইসঙ্গে খোয়া যাওয়া মালামালগুলোও উদ্ধার হবে বলে দাবি করেন তিনি। কিছু চুরির মালামাল উদ্ধারও করা হয়েছে।