পরীক্ষায় নির্ধারিত সময় চাওয়ায় শিক্ষার্থীদের হুমকি

শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি : সারাদেশের ন্যায় বগুড়ার শেরপুরে শুরু হওয়া এসএসসি পরীক্ষার বাংলা প্রথম পত্র পরিক্ষায় সময় মত শিক্ষার্থী কক্ষে অংশগ্রহণ করলেও ২০ মিনিট পরে খাতা ও প্রশ্নপত্র দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে দায়িত্ব প্রাপ্ত কক্ষ পরিদর্শক খন্দকার মতিউর রহমান ও শফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে। এবং পরবর্তী পরীক্ষা না দিতে পারে এমন হুমকি দেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে অত্র কলেজের পিওন ফরহাদের বিরুদ্ধে।

এ ঘটনায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভ বিরাজ করছে।

বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্র শেরপুর সরকারি ডিগ্রী কলেজের ১১৫ নম্বর কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, শেরপুর উপজেলার ৭টি কেন্দ্রের একটি শেরপুর সরকারি ডিগ্রী কলেজ একটি। এ কেন্দ্রের ১১৫ নম্বর কক্ষে পল্লী উন্নয়ন একাডেমী ল্যাব: স্কুল এন্ড কলেজে ১৩ জন, সামিট এন্টারন্যাশনাল স্কুল এন্ড কলেজে ১৩ জন, তাঁতড়া উচ্চ বিদ্যালয় ১২ জন, জাবাল-ই-রহমত আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় ১২ জন মোট ৫০ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন।

এই কক্ষে দায়িত্বপ্রাপ্ত কক্ষ পরিদর্শক হিসেবে ছিলেন পেঁচুল উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক খন্দকার মতিউর রহমান ও শফিকুল ইসলাম।

পরিক্ষার্থীদের ২০ মিনিট পর খাতা ও প্রশ্নপত্র দিলে শিক্ষার্থীরা দায়িত্বরত স্যারকে এই সময় পরবর্তীতে দিতে বলে। কিন্তু সময় শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অন্য রুমের খাতা নেওয়া দেখে তাদেরও খাতা নিয়ে নেয়। পূর্বের দেরি হওয়া ২০ মিনিট সময় আর দেওয়া হয়নি। এতে করে শিক্ষার্থীরা সম্পূর্ণ উত্তর দিতে না পেরে কাঁন্নায় ভেঙ্গে পড়েন।

তাদের কাঁন্না দেখে অভিভাবকরা কাঁন্নার বিষয়টি জানতে চাইলে তারা ২০ মিনিট দেরিতে খাতা ও প্রশ্নপত্র দেওয়া হয়েছে বলে জানান।

পল্লী উন্নয়ন একাডেমী ল্যাব: স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থী মাসুনুর সাঈক, জিহাদ, নাভীন, নাজিফ, সিজান, সানজিদ ও সামিট এন্টারন্যাশনাল স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থী ইউসুফ, মানাজিল, তাহসিনসহ অনেক শিক্ষার্থীরা কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, ২০ মিটিন সময় কম পাওয়াতে আমরা ১৫ থেকে ২০ নম্বরের উত্তর দিতে পারিনি। আমাদের আর এ+ পাওয়ার আশা নেই। আমাদের স্বপ্নকে ভেঙ্গে দিল। আমাদের উপরের উঠার সিঁড়িকে ভেঙ্গে চুড়মার করে দিল আজ। কি দোষ ছিল আমাদের।

শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা জানান, আমাদের ছেলেমেয়ে কক্ষে দায়িত্বপ্রাপ্ত কক্ষ পরিদর্শকের কাছে কি অপরাধ করেছে। তাদের ভবিষ্যৎ অন্ধকার করে দিল এই দুজন শিক্ষক। বর্তমানে রেজাল্টের উপর বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স, কিন্ত ২০ নম্বর উত্তরই দিতে পারেনি। রেজাল্ট ভালো হবে কিভাবে। তাই অতি দ্রুত এই দুইজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক। এবং শেরপুর সরকারি ডিগ্রী কলেজের পিওন ফরহাদ কোমলমতি শিক্ষার্থীদের হুমকি দিয়েছেন যেন সামনে কিভাবে পরীক্ষা দেয়। আমরা কোথায় বাস করছি। আমরা চাই ওই দুইজন শিক্ষকের সঙ্গে ফরহাদকে শাস্তি হিসেবে কলেজ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হোক।

এ বিষয়ে পিওন ফরহাদ জানান, আমি কোন শিক্ষার্থীকে হুমকি দেয়নি। তাদের পরবর্তী পরীক্ষা ভালো দেওয়ার কথা বলেছি।

দায়িত্বপ্রাপ্ত কক্ষ পরিদর্শক খন্দকার মতিউর রহমান জানান, ১৫ মিনিট সময় দেরি হয়েছিল খাতা ও প্রশ্নপত্র দিতে তবে পরবর্তীতে সেই সময় সমন্বয় করে নেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে কেন্দ্র সচিব সাইফুল ইসলাম জানান, সময়মত খাতা ও প্রশ্নপত্র দেওয়া এবং নেওয়া হয়েছে। এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি।

এ ব্যাপারে শিক্ষা অফিসার নজমুল হক জানান, এ বিষয়ে আমার জানা নেই। তবে এমন হলে দ্রুত তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।