সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি : সুনামগঞ্জের শাল্লায় ফেসবুকে দেওয়া ‘সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা’র উস্কানিমূলক এক পোস্টকে কেন্দ্র করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে পুলিশের দায়ের করা মামলায় কারাবরণকারী সমালোচিত সেই ঝুমন দাসকে ফের গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
বুধবার দুপুরে সুনামগঞ্জের আদালতে হাজির করা হয় ঝুমন দাসকে। আদালতের বিজ্ঞ বিচারক ঝুমন দাসের জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
উল্লেখ্য, গতকাল মঙ্গলবার (৩০ আগষ্ট ) সকালে শাল্লার নোয়াগাঁও গ্রামের ফেসবুকে উস্কানিদাতা সেই ঝুমন দাশকে প্রথমে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যায়। পরে ঝুমনকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তার স্বীকারোক্তি মূলক বক্তব্য দেয়ায় রাতে তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়।
এর আগে ফেসবুকে হেফাজতের সাবেক নেতা কারাবন্দি মামুনুল হকের সমালোচনার অভিযোগে গত বছরের ১৬ মার্চ গ্রেপ্তার হন সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার নোয়াগাঁও গ্রামের ঝুমন দাশ আপন। এরপর দাঙ্গায় নোয়াগাঁও গ্রামে হিন্দু সম্প্রদায়ের কয়েকটি বাড়িঘরে ও ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা ও ভঙ্গচুর করেছিল ওই এলাকার স্বাধীন মেম্বারের নেতৃত্বে (স্থানীয় যুবলীগ ওয়ার্ড সভাপতি) কয়েকজন। আবশ্য যুবলীগের জেলার দায়িত্বশীল এ কথা নাকচ করে বলেছিলেন স্বাধীন মেম্বার যুবলীগের কেউ না। আর এর দায় চাপানো হয়েছিল হেফাজতে ইসলাম সমর্থিত কর্মীদের উপর।
এই ঝুমন দাশ সাড়ে ৬ মাসের অধিক জেল খেটে গত বছরের ২৮ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় জামিনে মুক্তি পেয়ে বাড়ি ফিরেন।
জানা গেছে, ঝুমন দাসের ফেসবুক অ্যাকাউন্টের আইডিতে ‘মসজিদ-মন্দির’ নিয়ে একটি পোস্টকে কেন্দ্র করে ফের উত্তেজনা বইছে সুনামগঞ্জের শাল্লায়।
ওই পোস্টের পর মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে জেলার শাল্লা উপজেলার নোয়াগাঁও গ্রামের বাড়ি থেকে ঝুমনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসে পুলিশ।
জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানান, গেল ২৮ আগস্ট বেলা ৩টার দিকে শাল্লার হবিবপুর ইউনিয়নের নোয়াগাঁও গ্রামের গোপেন্দ্র দাসের ছেলে ঝুমন দাস প্রকাশ আপন (২৬) তার ‘ঝুমন দাস আপন’ ফেইসবুক আইডি থেকে একটি ‘উস্কানিমূলক’ পোস্ট করেন। ওই পোস্টের পর এলাকায় মানুষজনের মধ্যে ক্ষোভ ও উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, এর প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার দুপুরে ঝুমন দাসকে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি পোস্টটি তার করা বলে স্বীকার করেন। এরপরই তার বিরুদ্ধে শাল্লা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করে ঝুমনকে গ্রেফতার দেখানো হয়।
এলাকাবাসী জানান, গতবছর ঝুমন দাসের ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস কে কেন্দ্র করেই শাল্লা উপজেলা দাঙ্গার সৃষ্টি হয়েছিল। আর এই দাঙ্গায় হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর ভাঙচুর করেছিল ওই এলাকার স্বাধীন মেম্বার (স্থানীয় যুবলীগ ওয়ার্ড সভাপতি)।
আবশ্য যুবলীগের জেলার দায়িত্বশীল এ কথা নাকচ করে বলেছিলেন স্বাধীন মেম্বার যুবলীগের কেউনা। এ কারনে ঝুমন দাস আপন কয়েক মাস জেলে থেকে জামিনে এসে আবারো সাম্প্রদায়িক উস্কানি দিয়ে শান্তপ্রিয় জন পদে অশান্তি সৃষ্টিতে লিপ্ত আছে। শাল্লা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম বলেন, যে কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে নোয়াগাঁও গ্রামে পুলিশী টহল জোরদার করা হয়েছে। পরিস্থতি এখন শান্ত আছে।