লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি : জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় লক্ষ্মীপুরের কমলনগর ও রামগতি উপজেলার ভাঙ্গন কবলিত এলাকায় নদী বাঁধ নির্মাণ প্রকল্প অনুমোদন হয়েছে। মঙ্গলবার (১ জুন) প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে ভার্চুয়াল একনেক সভায় এ প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ‘লক্ষ্মীপুর জেলার রামগতি ও কমলনগর উপজেলাধীন বড়খেরী ও লুধুয়াবাজার এবং কাদের পণ্ডিতের হাট এলাকা ভাঙ্গন হতে রক্ষাকল্পে মেঘনা নদীর তীর সংরক্ষণ’ নামের প্রকল্পটির দৈর্ঘ্য হবে ৩১ কিলোমিটার। যা শেষ করতে প্রয়োজন হবে ৩ হাজার ৮৯.৯৭ কোটি টাকা ।
দুপুরে এ খবর সংবাদ মাধ্যমে প্রচার হলে বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংগঠন প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়ে ফেসবুকসহ সামাজিক মাধ্যমে হাজার হাজার পোস্ট করেন।
সন্ধ্যায় উপজেলা শহর হাজিরহাটে “কমলনগর-রামগতি বাঁচাও মঞ্চ” নামের মূল আন্দোলন কারী সামাজিক সংগঠন এর উদ্যোগে প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়ে মিছিল করতে চাইলে তাতে বাধা ও হামলা করা হয় বলে অভিযোগ করেন, ওই সংগঠনের আহবায়ক সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এডভোকেট আব্দুস সাত্তার পালোয়ান। তিনি কমলনগর প্রেসক্লাবে ও নিজের ফেসবুক লাইভে এসে ঘটনার বিস্তারিত জানান।
এ ঘটনার জন্য তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের ২ জন নেতাকে দায়ী করেন। এ হামলায় সামাজিক সংগঠনের ৫ জন কর্মী আহত হয়েছে বলেও অভিযোগ করা হয়।
ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিও পোস্টে দেখা যায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, পানি সম্পদ মন্ত্রী ও স্থানীয় সাংসদের ছবি সম্বলিত একটি ব্যানার নিয়ে মিছিলের প্রস্তুতি নেয় কিছু যুবক। এরপর দূর থেকে বলতে শোনা যায় ধর ধর।
এডভোকেট আব্দুস সাত্তার পালোয়ান জানান, মেঘনার ভাঙন থেকে রামগতি-কমলনগর রক্ষায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী একনেকে যে প্রকল্প পাস করেছেন, তাতে আমরা খুশি। আমরা দীর্ঘদিন থেকে কমলনগর ও রামগতি উপজেলা কে নদী ভাংগন থেকে বাচানোর জন্য ব্যবস্থা গ্রহণের দাবীতে আন্দোলন করেছি, তাই মঞ্চের পক্ষ থেকে আমরা সন্ধ্যায় আনন্দ মিছিল করতে বের হয়েছিলাম।
মিছিলে উপজেলা আ’লীগের সভাপতি ও সম্পাদক দু’জনেই অতিথি ছিলেন। আমাদের কৃতিত্ব হাইজ্যাক করতে তারা আমাদের মিছিলে না এসে উল্টো মিছিলে হামলা করেছে। এ সময় আমাকে রক্ষার জন্য মঞ্চের কর্মীরা চেষ্টা করতে গেলে ৫জন আহত হন। মঞ্চের পক্ষ থেকে এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই এবং ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত চাই৷
কমলনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোছলেহ উদ্দিন এ প্রসঙ্গে বলেন, আ’লীগ কর্মীরা মিছিল করছিল। এ সময় পাশে কমলনগর-রামগতি বাঁচাও মঞ্চের কর্মীরা ব্যানার নিয়ে অপেক্ষা করছে মিছিল করার জন্য। আ’লীগ কর্মীরা মঞ্চের কর্মীদের মিছিলে আহবান করলে তারা ভিন্ন মিছিল করবে বলে জানায়৷ এরপর ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। তবে ব্যানার ছিঁড়ে ফেলার বিষয়টি তিনি জানেন না বলে জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য লক্ষ্মীপুরের কমলনগর ও রামগতি উপজেলায় মেঘনা নদী ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্থ স্থানীয় তরুণদের সংগঠন “কমলনগর-রামগতি বাঁচাও মঞ্চ” একটি অরাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে ২০১৫ সালের পরে এ সংগঠনটির সূচনা হয়। শুরু থেকেই নদী ভাঙ্গন ইস্যু ও নদী ভাঙ্গন নিয়ে যে কোন অসঙ্গতি তুলে ধরছে এ সংগঠনের তরুণ ও যুবকরা।
সংগঠনটির উদ্যোগে নদী ভাঙ্গন ইস্যুতে উপজেলা, জেলা এবং ঢাকা শহরে মানববন্ধন, মিছিল ও বহু শোভাযাত্রা করা হয়েছে। স্থানীয় এলাকাবাসী এ সংগঠনকে বিভিন্ন সময় নদী ভাঙ্গনের পাহারাদার সংগঠন নামেও অভিহিত করেছে বলে জানিয়েছে সংগঠনটির সাথে জড়িতরা।