কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের বালুখালী এলাকায় রাস্তার উপরে কাঁটাতারের বেড়া। ছবিঃ হুমায়ুন কবির জুশান
হুমায়ুন কবির জুশান, কক্সবাজার : ক্যম্পে রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা বেষ্টনির ভেতর রাখতে কাঁটাতারের বেড়া দেয়া হয়েছে। এই কাঁটাতার ভেদ করে নানান কৌশলে রোহিঙ্গারা বেরিয়ে আসছে।
রোহিঙ্গা শিবিরে দেশি-বিদেশি ২১০টি এনজিও কাজ করছে।
এমনিতেই কক্সবাজার, উখিয়া-টেকনাফ পর্যটন এলাকা। সাথে রোহিঙ্গাদের কারণে ক্যাম্পে আসা-যাওয়া করে শত শত এনজিওর গাড়ি। ফলে এ পথে যানজটের শেষ নেই। ১১ নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের কাঁটাতারের বেড়া কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের উপর রয়েছে।
পালংখালী ইউনিয়নের বালুখালী মরা গাছতলা পার হয়ে টেকের ওপর রাস্তায় কাঁটাতারের বেড়ার কারণে জনসাধারণের চলাচলে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। একদিকে যানজট অন্যদিকে রাস্তায় কাঁটাতারে মানুষের ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে।
উখিয়া টিভি রিলে কেন্দ্র থেকে শুরু করে টেকনাফ যাওয়ার পথে রাস্তার ধারে ধারে এই কাঁটাতার চোখে পড়ার মতো।
স্থানীয় মোহাম্মদ ইসলাম বলেন, কক্সবাজার-টেকনাফ সড়ক ঘেঁষে এ ধরণের কাঁটাতারের বেড়া চলাচলের বিঘ্ন সৃষ্টির পাশাপাশি জননিরাপত্তায় ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে আছে। পরিকল্পিত উখিয়া চাই এর আহবায়ক সাংবাদিক নুর মোহাম্মদ সিকদার বলেন, সর্বত্র অপরিকল্পিত কাজের ফলে টেকসই উন্নয়ন হচ্ছে না। আমরা পরিকল্পিত উন্নয়ন ও নিরাপত্তা চাই। কক্সবাজার-টেকনাফ সড়ক প্রসস্থ হয়েছে কিন্তু মানুষের চলাচলে ফুটপাত নেই। যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং ও যানজটে নাকাল উখিয়াবাসি। তার উপর রাস্তায় কাঁটাতারের বেড়া। আমরা যাব কৈ?
স্থানীয়দের অভিযোগ, বিভিন্ন সময়ে বিদেশিরা ক্যাম্পে আসা-যাওয়া করে। তাছাড়া সরকার ও প্রশাসনের উচ্চপর্যায়ের ব্যক্তিরা এ সড়ক দিয়ে ক্যাম্পে যাতায়াত করেন। এহেন ঝুঁকিপূর্ণ কাঁটাতার তারা দেখে থাকেন। রোহিঙ্গাদের সার্বিক নিরাপত্তার পাশাপাশি স্থানীয়দের সুযোগ-সুবিধার প্রতি আরো যত্নশীল হওয়া দরকার।
পালংখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এম গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ক্যাম্পে ২১০টি দেশি-বিদেশি এনজিও কাজ করলেও আমাদের জনপ্রতিনিধিদের সাথে সঠিকভাবে সমন্বয় নেই। ক্যাম্প কেন্দ্রীক কাজে আমরা মোটেও সন্তুষ্ট নয়। এনজিওরা তাদের ইচ্ছে মতো কাজ করে থাকে। যদিও সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে ক্যাম্পে কাঁটাতারের বেড়া দেয়া হয়েছে। এরপরও কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের উপর কাঁটাতারের বেড়া জনদুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় মোহাম্মদ ইসলামের স্ত্রী সালমা আক্তার বলেন, আমার নয় বছরের মেয়ে ছালেহাকে নিয়ে রাস্তা দিয়ে হাটছিলাম। পেছন দিক থেকে গাড়ি আসায় ভয়ে হাঁটতে পারিনি। দাঁড়িয়ে যাই। যদি সড়ক দুর্ঘটনায় পতিত হতাম তাহলে কাঁটাতারের বেড়ায় আটকিয়ে মরে যেতাম। এই রাস্তার উপরে কাঁটাতার আমাদের জন্যে মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। তাই কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের উপর থেকে কাঁটাতার সরিয়ে ফেলতে জোর দাবি জানাচ্ছি।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কর্মররত এনজিও কর্মী মাসুমা, সানজিদা ও হুমায়রা জানান, ক্যাম্প থেকে কাজ শেষ করে হেঁটে রাস্তায় এসে গাড়িতে উঠতে হয়। রাস্তায় কাঁটাতারের বেড়ার কারণে হাঁটতে ভয় লাগে। যে কোন সময় মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটতে পারে পারে। তাই বিষয়টি সংশ্লিষ্টদের নজরে আনতে গণমাধ্যম কর্মীদের প্রতি আহবান জানাচ্ছি।