এম এম হারুন আল রশীদ হীরা, নওগাঁ : অবশেষে সব জটিলতার অবসান ঘটিয়ে শুরু হতে যাচ্ছে নওগাঁর রাণীনগর হয়ে নাটোর জেলার কালীগঞ্জ যাওয়ার ২২ কিলোমিটার সড়কের পাকাকরণের কাজ। নতুন করে কাজের দরপত্র আহ্বানের মাধ্যমে ঠিকাদার নিযুক্ত করা হয়েছে। বর্তমানে সড়কের প্রসস্থ ও নির্মাণ কাজ দীর্ঘ ৫ বছরেও শেষ না হওয়ায় মৃত্যুর ফাঁদে পরিণত হয়েছে। এই রাস্তা দিয়ে বগুড়া, নাটোরসহ কয়েকটি জেলার লাখ লাখ মানুষ নওগাঁসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে চলাচল করে।
এ ছাড়াও রাণীনগর উপজেলার পূর্বাঞ্চলের দুই শতাধিক গ্রামের মানুষদের চলাচলের জন্য এই সড়কটিই একমাত্র পথ। রাস্তার কেবলমাত্র কার্পেটিং তুলে কোন রকমে রোলার দিয়ে ফেলে রাখায় খানাখন্দকে পানি জমে পরিণত হয়েছে জলাশয়ে। দুর্ভোগে কয়েকটি জেলার লাখ লাখ মানুষ। এছাড়া ঝুঁকিপূর্ণ সড়কের বড় বড় গর্তে প্রতিনিয়তই ঘটছে দুর্ঘটনা।
নওগাঁ সড়ক বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, নওগাঁর জনগুরুত্বপূর্ন রাণীনগর-আবাদপুকুর-কালীগঞ্জ ২২কিলোমিটার সড়কটি ছিল এলজিইডির আওতায়। সড়কে অতিরিক্ত যানবাহন চলাচল এবং দীর্ঘ এলাকা জুড়ে মানুষের জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে এলজিইডি থেকে সড়ক ও জনপথ বিভাগে হস্তান্তর করা হয়। এই সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন বগুড়া ও নাটোর জেলাসহ রাণীনগর উপজেলার কয়েক লাখ মানুষ যাতায়াত করে।
রাণীনগর সদর থেকে আবাদপুকুর-কালীগঞ্জের মধ্যদিয়ে নাটোরের সিংড়ার ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কের সাথে মিলিত হয়েছে। রাস্তাটি প্রসস্থ এবং মজবুত পাকাকরণের জন্য গত ২০১৮ সালে দরপত্র আহবান করা হয়। দীর্ঘ ২২কিলোমিটার রাস্তার পাঁকাকরনের জন্য ৪৮ কোটি টাকা, ১৩টি কালভার্ট নির্মাণের জন্য ১৪কোটি টাকা ও ৪টি সেতু নির্মাণের জন্য ২৮কোটি টাকাসহ মোট ব্যয় ধরা হয় ৯০কোটি টাকা।
রাস্তা, কালভার্ট ও সেতু নির্মাণে সময় দেয়া হয় ২০১৯ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। কিন্তু ওই সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে না পারায় তৎকালীন ঠিকাদাররা একের পর এক অতিরিক্ত সময় চেয়ে আবেদন করতে থাকেন। অতিরিক্ত সময়েও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান কাজ শেষ না করায় গত ২০২১ সালের মে মাসে কাজের চুক্তিপত্র বাতিল করে ৪কোটি টাকা আর্থিক জরিমানা করা হয়। ইতিমধ্যেই সকল সেতু ও একটি কালভার্ট ছাড়া সকল কালভার্ট নির্মানের কাজ শেষ হয়েছে। কিন্তু দীর্ঘ সময় রাস্তার কার্পেটিং তুলে কোন রকমে রোলার দিয়ে ফেলে রাখার কারণে রাস্তা জুড়ে ছোট-বড় খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করছে পথচারীরা। প্রতিদিনই সড়কের কোথাও না কোথায় ছোট-বড় যানবাহন উল্টে পড়ছে। নষ্ট হচ্ছে ছোট ছোট যানবাহনের যন্ত্রাংশ।
নওগাঁ সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ সাজেদুর রহমান বলেন, অতিদ্রুত এই সড়কের পাকাকরনের কাজ শুরু করা হবে। ইতিমধ্যেই সকল জটিলতার অবসান ঘটিয়ে সম্প্রতি সড়কের পাকাকরনের কাজ সম্পন্ন করার জন্য নতুন করে দরপত্রের মাধ্যমে ঠিকাদার নিযুক্ত করা হয়েছে। নতুন চুক্তি অনুসারে আগামী বছরের জুন-জুলাই মাসের মধ্যে সড়কের সকল কাজ সম্পন্ন করে আমাদের কাছে হস্তান্তরের কথা রয়েছে। আমি আশাবাদি নির্ধারিত সময়ের আগেই ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান সড়কের সকল কাজ সম্পন্ন করতে পারবেন এবং এলাকাবাসীরা দ্রুতই দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পেয়ে যোগাযোগের নতুন ধারার সঙ্গে যুক্ত হতে পারবেন।