মিজানুর রহমান মিজান, রংপুর অফিস : রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ‘প্রায় তিন মাস ধরে’ সব এসি বিকল রয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
চিকিৎসা নিতে আসা লোকজনের অভিযোগ, শুধু এসি নয়, ইলেকক্ট্রিক ফ্যানও চলে না। এতে তীব্র গরমে যন্ত্রণা সহ্য করতে পারছে না অনেক রোগী।
চিকিৎসকরাও বলছেন, গরমে আগুনে পোড়া রোগীদের কক্ষে এসি চালু রাখা খুবই জরুরি।
দিনাজপুর ঘোড়াঘাট থেকে অগ্নিদগ্ধ এক বছরের শিশু জাকারিয়া রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি হয়েছে। তার সাথে আছেন মা রহিমা বেগম। এসি নষ্ট থাকায় হাত পাখা দিয়েই কোলের শিশুকে বাতাস করছেন তিনি।
শিশুটির মা রহিমা খোলাবার্তা টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বার্ন ইউনিটে বৈদ্যুতিক ফ্যানও নেই। শরীরে ২০ ভাগ পোড়া নিয়ে ছটফট করছে তার এক বছরের শিশু।
রহিমা বেগম বলেন, “দিন রাত বাতাস করতে হয়, না করলে ছটফট করতে থাকে আমার শিশু সন্তান।”
গাইবান্ধা থেকে শরীরের ১৫ ভাগ অগ্নিদগ্ধ শিশু আব্দুল্লাহকে নিয়ে এ বার্ন ইউনিটে রয়েছেন আফরোজা বেগম। তিনিও হাত পাখা দিয়েই কোলের শিশুকে বাতাস করছেন।
শিশুটির মা আফরোজা খোলাবার্তা টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বার্ণ ইউনিটে ২৩ দিন ধরে ছটফট করছে তার দুই বছরের শিশুটি।
আফরোজা বলেন, “বাবা কি কমো তোমাক, এসি তো নাই নাই, এ্যটে কোনা কোনো ফ্যানও নাই। হামরা আসছি থাকি দেখি, এসি চলে না। পাখা দিয়ে বাতাস করতে করতে হাত ব্যথা করে কিন্তু কিছু করার নাই হামরা কি করমো।”
নীলফামরী জলঢাকা থেকে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী আকলিমা (৬) বাবা আলাকুল মিয়া খোলাবার্তা টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, আমার মেয়েকে নিয়ে দুই মাস থেকে আছি এখানে। কোন দিন এসি চলে নাই। হাত পাখা দিয়ে বাতাস করি। আমরা গরিব মানুষ, আমরা তো ফ্যান কিনতে পারি না। খুব কষ্ট করে আছি।
একই অবস্থা শিশু ঋষি মনি, মাহিশ, আমিনুলসহ আরো অনেকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি সব রোগীরা।
চিকিৎসকরা বলছেন, “এসি না থাকায় আগুনে পোড়া রোগীদের চিকিৎসা দিয়েও খুব একটা ফল পাওয়া যাচ্ছে না।”
হাসপাতালের তথ্য মতে গত এক মাসে এ বার্ন ইউনিটে পাঁচ রোগীর মৃত্যু হয়েছে।
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক রেজাউল করিম খোলাবার্তা টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মন্ত্রণালয় থেকে বাজেট পাশ হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে সব ঠিক হয়ে যাবে।”