কুমিল্লা সংবাদদাতা : শখের বসে কিনেছিলেন এক জোড়া ময়ূর। সেই এক জোড়া ময়ূর থেকে এখন গড়ে উঠেছে বাণিজ্যিক খামার। বর্তমানে খামারে রয়েছে শতাধিক ময়ূর। স্বপ্ন দেখছেন খামারটিকে আরো বড় করার।

এখন এই খামারের ময়ূর বিক্রি করে বছরে তার লাভ ১০ লাখ টাকা। এনেছেন নিজের ও পরিবারের স্বচ্ছলতা।

এমনই রূপকথার মতো ভাগ্য বদলানো যুবকের নাম শাহ আলী। তার বাড়ি কুমিল্লা জেলার হোমনা উপজেলার বাবরকান্দি গ্রামে।

বাবরকান্দি গ্রামে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দর্শনার্থীরা ভিড় করে রেখেছেন শাহ আলীর ময়ূরের খামার। খামারের ভেতর মনের আনন্দে উড়ছে ময়ূর।

শাহ আলী বলেন, আমার বাবা এক সময়ে গরুর খামার করেছিলেন। বাবা মারা যাওয়ার পর ময়ূর পালন শুরু করি। প্রথমে ২০১৯ সালের শেষ দিকে নিজের জমানো ১ লাখ ৬৫ হাজার টাকা দিয়ে এক জোড়া ময়ূর কিনে আনি। ওই ময়ূর বেশ কয়েক মাস পর ডিম দেয়া শুরু করে। প্রথমে ২৪টি ডিম দেয়। সেখান থেকে ১৭টির বাচ্চা হয়। এগুলো লালন-পালনের জন্য ৮০ হাজার টাকা ব্যয়ে একটি শেড নির্মাণ করি।

শাহ আলী জানান, তিনি ২০২০ সালের শেষ দিকে এসে ময়ূর বিক্রি শুরু করেন। শৌখিন মানুষজন এগুলো কিনে পালন করেন। এক জোড়া ময়ূর ৫০ হাজার থেকে শুরু করে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করেন। ২০২০-২১ সালে ২০ লাখ টাকার ময়ূর বিক্রি করেছেন। এতে তার মুনাফা হয়েছে ১০ লাখ টাকা।

তিনি জানান, বর্তমানে তার খামারে ১০৫টি ময়ূর আছে। যার বাজারমূল্য ৩০ লাখ টাকা। এগুলোর মধ্যে কিছু আছে ছোট এবং বেশ কয়েকটা ডিম দেবে। চলতি বছরের জুন-জুলাইয়ের দিকে বেচাবিক্রি শুরু করবেন।

শাহ আলী বলেন, ময়ূর লালন-পালন খুবই সহজ। এটা সৌখিন জিনিস। কেউ ভুল করে আগে খামারের পরিকল্পনা করবেন না। শুরুতে দুই-এক জোড়া পালন করে যদি মনে করেন পারবেন, তাহলে খামার করার উদ্যোগ নেয়া উচিত।

তিনি বলেন, ময়ূর যখন-তখন বিক্রি করা যায় না। মানুষের পছন্দ হলে কিনবে। যারা বেকার রয়েছেন, বা চাকরি খোঁজেন তারা চাইলে শখের বসে ময়ূর পালন করতে পারেন। আমি যেহেতু লাভবান হয়েছি, তারাও হবেন। যে কোনো পরামর্শ দিতে আমি প্রস্তুত।

এ বিষয়ে কুমিল্লা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, শাহ আলীর খামার জেলার একমাত্র ময়ূর খামার। নিয়মিত তার খামার পরিদর্শন ও সার্বিক সহযোগিতা করা অব্যাহত রয়েছে। ময়ূরের পাশাপাশি তিনি গরু, ভেড়া, তিতির পাখি ও কোয়েল পালন করছেন।