এম মাঈন উদ্দিন, মিরসরাই (চট্টগ্রাম) : আজ মিরসরাই হানাদার মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের ৮ ডিসেম্বর এই দিনে মিরসরাই উপজেলা পাক হানাদার মুক্ত হয়। ৭ মার্চে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণ শোনার পর থেকেই মিরসরাইয়ের সর্বস্তরের জনতা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত গঠন শুরু করে।
দিবসটি উপলক্ষে সকাল ১০টায় উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড ও উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে মিরসরাই উপজেলা শহীদ মিনারে র্যালী এবং উপজেলা সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। করোনা ভাইরাসের কারণে সংক্ষিপ্ত আকারে স্বাস্থ্যবিধি মেনে অনুষ্ঠান পালন করা হবে।
জানা গেছে, ১৯৭১ সালের ৮ ডিসেম্বর সকাল বেলা মুক্তিযোদ্ধা জাফর উদ্দিন আহম্মদের বিএলএফ গ্রুপের মুক্তিযোদ্ধাসহ প্রায় দু’শ মুক্তিযোদ্ধা মিরসরাই সদরের পূর্ব দিক ছাড়া বাকী তিন দিক ঘিরে ফেলে। বেলা প্রায় ১১টার দিকে মুক্তিযোদ্ধারা তিন দিক থেকে সংগঠিত হয়ে শত্রুর বিরুদ্ধে এক যোগে আক্রমন শুরু করে। শুরু হয় পাক সেনা ও মুক্তিযোদ্ধাদের গুলি বিনিময়। পাক সেনাদের অবস্থান ছিল মিরসরাই হাই স্কুল, মিরসরাই থানা, মিরসরাই সি.ও. অফিস। বৃষ্টির মতো গুলি বিনিময়ের এক পর্যায়ে পাক সেনারা পলিয়ে যায়। পরবর্তীতে মুক্তিযোদ্ধারা থানায় প্রবেশ করে পাক সেনাদের আটটি রাইফেল উদ্ধার করে। পাক সেনারা চট্টগ্রামের দিকে পালিয়ে গেছে বলে পরে জানা যায়। চট্টগ্রামের কোন অঞ্চল তখনো মুক্তির স্বাদ পায়নি। মিরসরাই শত্রুমুক্ত হয়েছে-এ কথা বাতাসে দ্রুত ছড়িয়ে যায় মিরসরাইয়ের সর্বত্র। মুহুর্তেই চতুর্দিক থেকে জয় বাংলা স্লোগানে মুখরিত মিছিল আসতে থাকে। হাজারো জনতার ঢল নামে মিরসরাই হাই স্কুল মাঠে। মৌলভী শেখ আহম্মদ কবির কোরআন তেলাওয়াত করেন। পরে জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধা জাফর উদ্দিন আহাম্মদ চৌধুরীসহ সবাই জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। ঘোষণা করা হয় মিরসরাই ভূখন্ড পাক বাহিনীমুক্ত একটি স্বাধীন এলাকা। সে থেকে ৮ ডিসেম্বর মিরসরাইয়ে উদ্যাপিত হয়ে আসছে হানাদারমুক্ত দিবস।
মিরসরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মিনহাজুর রহমান জানান, মিরসরাই হানাদার দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার সকালে উপজেলা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে র্যালী বের করা হবে। র্যালী শেষে মিরসরাই হানাদার মুক্ত দিবস নিয়ে উপজেলা সম্মেলন কক্ষে সংক্ষিপ্ত আকারে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।