বারইয়ারহাট-মাদারবাড়ি রুট : নতুন যাত্রীবাহী বাস চালুর দাবি

মিরসরাই (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি : চট্টগ্রাম-বারইয়ারহাট রুটে চলাচল করা চয়েস সার্ভিসের বাসগুলো এখন যাত্রীদের বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। নামে বিরতিহীন হলেও, চলে নিজেদের ইচ্ছেমত। ভাড়াও অন্যান্য বাসের তুলনাই বেশি নেয়। তার মধ্যে রয়েছে যাত্রী উঠা-নামা। তাও নির্দিষ্ট কোন স্টপেজ নেই। যদিও সকালে এ পরিবহনে যাত্রা করেন চাকরীজীবীরা। হাতে অতিরিক্ত সময় নিয়ে বিরতিহীন ‘চয়েস পরিবহনে’ চড়লেও নির্দিষ্ট সময়ে ( অফিসিয়্যাল টাইম) গন্তব্যে পৌঁছানো সম্ভব হয় না।

এ বিষয়ে বাস চালক, সহকারীদের অনুরোধ করলেও তাদের টনক নড়ে না। যাত্রায় এমন ভোগান্তির তিক্ততার ঝড় উঠেছে এবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এছাড়া অধিকাংশ গাড়ি লক্কর-ঝক্কর। সিটগুলো অনেক ছোট, সিটের সামনে পা মেলে বসা যায় না।

মিরসরাই উপজেলা থেকে চট্টগ্রাম শহরে যাওয়ার যাত্রীবাহী বাস ‘চয়েস’ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা তিক্ত অভিজ্ঞতা আর ক্ষোভ নিয়ে পোস্ট করছেন ভুক্তভোগীরা।

অভিযোগ রয়েছে, চয়েস বাস বারইয়ারহাট পৌর বাজার থেকে চট্টগ্রাম শহরের মাদারবাড়ি ও নিমতলা এলাকা পর্যন্ত যায়। এরমাঝে যেখান থেকেই যাত্রী উঠুক বিরতিহীন বলে ১৩০ টাকা ভাড়া নেয়। তবে নিয়ম অনুযায়ী বারইয়ারহাট থেকে ছেড়ে বড়দারোগারহাট পর্যন্ত ৩৫ কিলোমিটারে শুধু বাসস্ট্যান্ড গুলো থেকে যাত্রী উঠানোর কথা থাকলেও নিয়মের তোয়াক্কা না করে ইচ্ছেমত সময় নিয়ে যেখান সেখান থেকে যাত্রী উঠানো হয়। অনেক সময় গাড়ির ভেতর যাত্রী উঠানামা, চট্টগ্রাম শহরে দেরিতে পৌঁছানো আর ভাড়া নিয়ে যাত্রীদের সাথে হাতাহাতির মত ঘটনাও ঘটে। শুধু অভিযোগ নয় অনেকের দাবি যেন মিরসরাইবাসীর জন্য চয়েস এর বিকল্প নতুন কোন যাত্রী বহনকারী গাড়ির ব্যবস্থা করা হয়।

এ নিয়ে উপজেলার এক সমাজকর্মী এক পোস্টের কমেন্টে লিখেন, “আজকের অভিজ্ঞতা বলি- বড়তাকিয়া এসে ইচ্ছেমত যাত্রী নিলো। আমি উঠে নেমে যেতে চাইলাম, তারা বললো- এই তো দারোগারহাটে সিট খালি হয়ে যাবে, নামবেন না। দারোগারহাটে ৫/৬ জন নামলেন। কে যেন টাকা না দিয়ে নেমে গেছে। হেলপার দশ মিনিট ধরে তাকে খুজলেন, পেলেন না। সীতাকুন্ডে যাত্রী উঠা নামা হলো। তারপর চেকারের জন্য বিরতি। গাড়িতে থাকা যাত্রীরা বিরক্তি প্রকাশ করলেন।

মোহাম্মদ ফয়সাল ভূঁইয়া কমেন্টে লিখেন, নেতারা বড় বড় কথা বলে। নিজে চলে এসি আর ব্যক্তিগত গাড়িতে, সাধারণ জনগণের কথা কেউ বলে না। চয়েস বন্ধ করে দেওয়া উচিত।

নুরুল করিম নামে এক যাত্রী বলেন, বারইয়ারহাট থেকে শহরে যাওয়ার পথে আন্তঃজেলার কোন বাস যাত্রী উঠাতে পারে না। চয়েস বাসের চালক-হেলপাররা বাধা দেয়। মাঝে মধ্যে ওইসব গাড়ির চালক হেলপারকে মারধরও করে। চয়েস গাড়ির চালক-হেলপারেরা মনে করে সড়ক তাদের বাপ-দাদার সম্পত্তি।

পলাশ মিয়া স্বাধীন লিখেন, বারইয়ারহাট থেকে চট্টগ্রাম ২ ঘন্টা ৩০ মিনিট এর নাম চয়েস গাড়ি উত্তরার চেয়েও খারাপ-গাড়ি মনে হয়, তারা যেন প্যাডেল মেরে মেরে চালায়। ১৩০ টাকা দিয়ে চয়েসে না গিয়ে, শ্যামলী, হানিফ, তিশা, গ্রাম বাংলা পরিবহনের বাসে ১০০টাকা দিয়ে যাওয়া ভালো।

চয়েস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নুরুল আবছার মুঠোফোনে বলেন, আমি রিসেন্টলি মোবাইলে কোন কথা বলতে পারতেছি না, আপনি যাই বলবেন সরাসরি এসে কথা বলবেন। আমার অফিসে আসেন।

মিরসরাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহফুজা জেরিন জানান, যাত্রীবাহী চয়েস বাসের বিষয়ে আমি অবগত ছিলাম না, কেউ যদি অভিযোগ দেয় তাহলে প্রয়াজনীয় পদক্ষেপ নেব।