অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এ কে এম আবুল হাসান আলীর সংবাদ সম্মেলন
হুমায়ুন কবির জুশান, কক্সবাজার : কক্সবাজারের উখিয়া রাজাপালং এমদাদুল উলুম ফাজিল (ডিগ্রী) মাদ্রাসার অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও বর্তমান সভাপতি এ.কে এম আবুল হাসান আলীর বিরুদ্ধে ২ কোটি ৫ লাখ টাকার দুর্নীতির অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেছেন বর্তমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুল হক। এদিকে তার সংবাদ সম্মেলনের ব্যানারে সাবেক অধ্যক্ষ ও বর্তমান সভাপতিকে জামাতের সাবেক আমির ও রুকন উল্লেখ করে তাকে ঘায়েল করার অপচেষ্টায় জামায়াত-শিবিরের একটি অংশ ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
এদিকে উখিয়া-টেকনাফের আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ডিও লেটার দেওয়ায় আওয়ামী লীগের মধ্যেও মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। ঐ অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের ২৮ তারিখ মাদ্রাসা থেকে অবসরে যান। তিনি অবসরে গেলেও হিসাবপত্র না দেওয়ায় এবং কৌশলে গভর্ণিং বডির নব-মনোনিত সভাপতি হওয়ায় ২৭ শিক্ষকের মধ্যে ২৩ জন শিক্ষক তার বিরুদ্ধে অনাস্থার প্রস্তাব এনেছেন।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মাদ্রাসার শিক্ষক, ছাত্র ও অভিভাবকদের মধ্যে বিরাজ করছে চরম হতাশা ও উত্তেজনা। একাধিক শিক্ষকের সাথে কথা হলে তারা বলেন, অবসরপ্রাপ্ত জামায়ের নেতা অধ্যক্ষ একেএম আবুল হাসান আলী বিগত ৯ বছরের ২ কোটি ৫ লক্ষ টাকা লুটপাট করেছেন। আর ঐ অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাদ্রাসার ২৬ একর জমির টাকার হিসাব দেয়নি মাদ্রাসার কর্তৃপক্ষকে। তার সময়ের বকেয়ার বিদ্যুৎবিল ২৪ হাজার টাকা। জমির খাজনা দিতে হয়েছে ৫৬ হাজার টাকা। রাজাপালং ইমইউ ফাজিল ডিগ্রী মাদ্রাসায় শিক্ষকের সংখ্যা ২৭ জন। ২৩ জন শিক্ষক তার বিরুদ্ধে অনাস্তাব প্রস্তাব এনেছেন।
যে ৪ জন শিক্ষক তার পক্ষে আছেন, তারা হলেন- তার জামাতা ইংরেজি প্রভাষক মুহাম্মদ রশিদ, সহকারি শিক্ষক (গণিত) জুনাইদ মোস্তফা, ও তারই ছেলে আরবি প্রভাষক আবু বরদা মোহাম্মদ নোমান এবং তার ছোট ভাই মনাজের আহসান।
উখিয়া-টেকনাফের সরকার দলীয় সংসদ সদস্য শাহিন আক্তার ডিও লেটারের মাধ্যমে আরবী বিশ্ববিদ্যালয় তাকে রাজাপালং মাদ্রাসার সভাপতি হিসাবে মনোয়ন দিলে উখিয়া সৃষ্টি হয় তোলপাট। শিক্ষক মহলের দাবি দীর্ঘ ৩২ বছর ধরে অবসর প্রাপ্ত অধ্যক্ষ একেএম আবুল হাসান আলী মাদ্রাসার সম্পদকে লুটপাট করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
আবুল হাসান আলীকে উক্ত মাদ্রাসার সভাপতির পদ থেকে অব্যহতি প্রদান করে নতুন পরিচালনা কমিটি গঠন না করলে মাদ্রাসার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরে আসবে না। বর্তমানে সভাপতিকে কেন্দ্র করে ২৭জন শিক্ষক বেতন পায়নি বলেও জানিয়েছেন মাদ্সারার শিক্ষকরা।
এদিকে সদ্যবিদায়ী অধ্য্যক্ষ মাওলানা আবুল হাসান আলীও সংবাদ সম্মেলন করে বলেছেন, ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয় বিধিমতে আমাকে মাদ্রাসার গভর্ণিং বডির সভাপতি মনোনিত করা হয়েছে। এই প্রক্রিয়াকে অবৈধ বলার কোন সুযোগ নাই।
তিনি আরও বলেন, মাদ্রাসার শিক্ষার মান উন্নয়নে সরকারের যুগোপযোগী সিদ্ধান্তের বিপক্ষের শক্তিরাই আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। তাদের অভিযোগের কোন ভিত্তি নেই। তারা আমাকে জামায়াত নেতা বানিয়ে অপপ্রচার করছে। আমার প্রশ্ন ওরা কার?
বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্তের বিরোধীতা কেন, কোন উদ্দেশ্যে করছে? মাদ্রাসার সুন্দর পরিবেশ কারা নস্যাৎ করতে চায়, তাদের পরিচয় আপনাদের নিকট স্পষ্ট। সাধারণ শিক্ষার্থীরা বলেন, দীর্ঘ ৩২ বছর ধরে অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এ এক এম আবুল হাসান আলী উক্ত মাদ্রাসার অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এখন আবার কেন সভাপতি হওয়া লাগে। তবে তাকে সম্মানের সাথে রেক্টর হিসেবে চাইলে রাখা যায়। আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ চাই।