খোলাবার্তা২৪ ডেস্ক : বরেণ্য নাট্যকার, দেশের পথনাটকের অন্যতম পুরোধা নাট্যজন মান্নান হীরা আর নেই।
বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ঝুনা চৌধুরী জানিয়েছেন, রাত সাড়ে ৮টার দিকে রাজধানীর ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ইন্তেকাল করেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।
তার বয়স হয়েছিল ৬৩ বছর। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে সোমবার থেকে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
এদিকে মান্নান হীরার মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
এক শোকবার্তায় রাষ্ট্রপতি মরহুম মান্নান হীরার রুহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
পৃথক এক শোকবার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের নাট্যাঙ্গনে বিশেষ করে পথ নাটক আন্দোলনে অসাধারণ অবদানের জন্য জাতি তাকে স্মরণ করবে।
মান্নান হীরা দীর্ঘদিন পথনাটকের আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। আমৃত্যু তিনি বাংলাদেশ পথনাটক পরিষদের সভাপতি ও আরণ্যক নাট্যদলের অধিকর্তা ছিলেন।
মান্নান হীরার নাট্য রচনার প্রধান উপাদান নিরন্ন মানুষ ও দরিদ্র জনপদ। বিশেষ করে তার পথনাটক বিশাল কৃষিজীবী মানুষ, তাদের উৎপাদন ও উপকরণ কেন্দ্র করে লেখা।
তার উল্লেখযোগ্য নাটকগুলির মধ্যে রয়েছে- লাল জমিন, ভাগের মানুষ, ময়ূর সিংহাসন, গিরগিটি, সাদা-কালো ইত্যাদি। মূর্খ লোকের মূর্খ কথা মান্নান হীরা রচিত ও নির্দেশিত অন্যতম পথনাটক।
তার পথনাটক ভারতবর্ষের বিভিন্ন প্রদেশে নিয়মিতভাবে অভিনীত হয়ে থাকে। একই সঙ্গে তার একাধিক নাটক অনূদিত হয়ে দিলি, হংকং, পাকিস্তান, নেপালসহ অনেক দেশে প্রদর্শিত হয়ে আসছে।
২০১৪ সালে তিনি সরকারের অনুদানে শিশুতোষ চলচ্চিত্র ‘একাত্তরের ক্ষুদিরাম’ তৈরি করেন। এটি তার পরিচালিত একমাত্র চলচ্চিত্র। এর বাইরে ‘গরম ভাতের গল্প’ ও ‘৭১-এর রঙ পেন্সিল’ নামে দু’টি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রও পরিচালনা করেন।
২০০৬ সালে তিনি নাটক শ্রেণিতে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন।
আগামীকাল সকাল ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত মান্নান হীরার মরদেহ শিল্পকলা একাডেমীর জাতীয় নাট্যশালা প্রাঙ্গণে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য রাখা হবে। এরপর সেগুনবাগিচা মসজিদে নামাজে জানাজা শেষে তাকে সিরাজগঞ্জ নেয়া হবে। সেখানে তার দাফন সম্পন্ন হবে।