বগুড়া অফিস : বগুড়ায় প্রতিবন্ধী ভাতা নিতে গিয়ে প্রাণ গেল শামীম মন্ডল (৪৫) নামের এক প্রতিবন্ধির। গত সোমবার বগুড়া শহরের ঠনঠনিয়া ফাযিল মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, সমাজসেবা অধিদপ্তর কর্তৃক প্রতিবন্ধী ভাতার জন্য মনোনীত বগুড়া পৌরসভার ১৯,২০ ও ২১ নং ওয়ার্ডের তালিকাভুক্ত ৭৫০ জন প্রতিবন্ধী ৩ মাসের এককালীন ভাতা ২ হাজার ২৫০ টাকা নেয়ার জন্য সকালে ভাই পাগলা মাজার কমপ্লেক্সের দোতলায় অবস্থিত সোনালী ব্যাংক লিঃ শেরপুর রোড শাখায় গেলে তাদেরকে ঠনঠনিয়া ফাযিল মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে সমবেত হওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়। এরপর তারা মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে গেলে সেখানে সামাজিক দূরত্ব দূরের কথা বিশৃংখল পরিবেশ সৃষ্টি হয়।

এমতাবস্থায় দীর্ঘক্ষণ মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে ভাতা নেয়ার জন্য দাড়িয়ে থাকা দুস্থ ভাতা গ্রহীতা বগুড়া সদরের ২০ নং ওয়ার্ডের অধীনস্থ আকাশতারা মন্ডল পাড়ার চেন্টু মন্ডলের ছেলে শামীম মন্ডল (৪৫) বিকাল ৫টায় মানুষের ভীড়ের চাপে ঘটনাস্থলে পড়ে গিয়ে মৃত্যুবরণ করেন।

এ ঘটনায় মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে সমবেত জনসাধারণের মাঝে উত্তেজনা দেখা দিলে, দায় এড়ানোর জন্য সোনালী ব্যাংকের কর্মচারীরা দুস্থ ভাতা গ্রহীতাদের ব্যাংক কাউন্টারে সমবেত হওয়ার নির্দেশ দেয়। ব্যাংক চত্বরে উপস্থিত বিক্ষুব্ধ প্রতিবন্ধীরা বলেন, মাদ্রাসা মাঠে প্রায় হাজারের মতো লোক উপস্থিত থাকলেও ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ভীড় এড়াতে কোন পদক্ষেপ নেয়নি। এমনকি ভাতার অর্থ দেয়ার ক্ষেত্রেও কোন স্বাস্থ্যবিধি মানা হয়নি। তারা আরও বলেন, যদি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা নিত তবে এমন হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটতো না।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শামীমের গায়ে সকাল থেকে জ্বর ছিল। সে ষ্ট্রোক করে মারা গেছে বলে মনে হয়।

এ ঘটনায় সোনালী ব্যাংক লিমিটেড শেরপুর রোড শাখার সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার আলেয়া ফেরদৌস বলেন, তাৎক্ষণিকভাবে মৃত শামীম মন্ডলের স্বজনদেরকে ৫০০ টাকা দিয়ে বিদায় করেছি। তিনি আরও বলেন, এ ঘটনা দু:খজনক।

এ বিষয়ে ব্যাংকে উপস্থিত বগুড়া সদর সমাজসেবা কর্মকর্তা নুরুল ইসলামের দৃষ্টি আকর্ষন করা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি অনাকাঙ্খিত একটি ঘটনা।

এ বিষয়ে সোনালী ব্যাংকের এজিএম রবীন্দ্রনাথ বিশ্বাস বলেন, ঘটনাটি জানার পরপরই আমি ব্যাংকে ছুটে এসেছি। এটি আসলে একটি দূর্ঘটনা ছাড়া আর কিছুই নয়।