খোলাবার্তা২৪ ডেস্ক : শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, বই আমাদের অতীত ও ভবিষ্যতের যোগসূত্র তৈরি করে দেয়। তাই বই পড়া খুব জরুরি। বই পড়া প্রক্রিয়াটি হবে আনন্দময়।
তিনি বলেন, শ্রেণিকক্ষ হয়তো ছোট হতে পারে কিন্তু বই পড়ার মাধ্যমে মনের বিশাল রাজ্যে প্রবেশ করা যায়। সারাদেশের মাধ্যমিক পর্যায়ের প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এই কর্মসূচি চালু করা ও কর্মসূচির মেয়াদ বৃদ্ধির জন্য তাঁর মন্ত্রণালয় কাজ করছে বলে তিনি জানান।
শিক্ষামন্ত্রী রোববার সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে ‘পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচি’র ঢাকা বিভাগের ওরিয়েন্টেশন কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
রোববার ২২ জানুয়ারি ঢাকার সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন সেকেন্ডারি এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম (এসইডিপি)-এর অন্তর্ভুক্ত স্ট্রেংদেনিং রিডিং হ্যাবিট অ্যান্ড রিডিং স্কিলস অ্যামাং সেকেন্ডারি স্টুডেন্টস স্কিমের আওতায় ‘পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচি’র ঢাকা বিভাগের ওরিয়েন্টেশন কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
কর্মশালায় ঢাকা বিভাগের ১৩টি জেলার জেলা শিক্ষা অফিসার, কর্মসূচিভুক্ত ৫৩টি উপজেলার উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারগণ অংশগ্রহণ করেন। মাঠ পর্যায়ে পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচি সুষ্ঠু ও সফলভাবে পরিচালনার জন্য স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই দেশের প্রতিটি বিভাগীয় শহরে স্কিমভুক্ত উপজেলাসমূহের উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারগণকে পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচির বিষয়ে বিস্তারিত ধারণা প্রদান এবং বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া অবহিত করার জন্যেই এই ওরিয়েন্টেশন কর্মশালা আয়োজন করা হয়।
কর্মশালায় ঢাকা বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার জনাব মো. খলিলুর রহমান-এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপি। প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচির টিম লিডার ও বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের সভাপতি অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাননীয় শিক্ষা উপমন্ত্রী জনাব মহিবুল হাসান চৌধুরী এমপি। বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব জনাব সোলেমান খান, এসইডিপি’র ন্যাশনাল প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর ও অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) জনাব বেলায়েত হোসেন তালুকদার, এসইডিপি’র প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর ও অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন ও অর্থ) জনাব একেএম আফতাব হোসেন প্রামানিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মাধ্যমিক উইং-এর পরিচালক ও স্কিম পরিচালক প্রফেসর মোহাম্মদ বেলাল হোসাইন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শিক্ষা উপমন্ত্রী জনাব মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, উদ্ভাবনী শক্তি ও দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য পাঠের অভ্যাস বাড়াতে হবে। জ্ঞান নির্ভর অর্থনীতির মূল ভিত্তিই উদ্ভাবনী শক্তি। সেটা বাড়িয়ে নেবার জন্য পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচির এই বইগুলো অবশ্যই পড়া দরকার।
প্রধান বক্তার বক্তৃতায় পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচির টিম লিডার ও বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের সভাপতি অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, বই পড়া কঠিন কিন্তু বইয়ের সাথে একবার যোগাযোগ হয়ে গেলে তা খুবই আনন্দের ব্যাপার। আনন্দ নিয়ে বাঁচাই জীবন। একটি জাতি যখন আলোকিত হয়, তার চেয়ে বড় কিছু হতে পারে না। রাষ্ট্রকে শ্রেষ্ঠ করে গড়ে তোলার দায়িত্ব আমাদের সকলের বলে তিনি তাঁর বক্তব্য শেষ করেন।
সভাপতির বক্তব্যে ঢাকা বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার জনাব মো. খলিলুর রহমান সকল অতিথি এবং অংশগ্রহণকারীগণকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, এই পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচিভুক্ত শিক্ষার্থীরাই ২০৪১ সালের উন্নত, সুখী ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে নেতৃত্ব দেবে।
এই কর্মশালার মাধ্যমে ঢাকা বিভাগের ৫৩টি উপজেলার ২২৯৫টি মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচির বইপড়া কার্যক্রম শুরু হবে। এর ফলে আনুমানিক ৩৯০১৫০ জন ছাত্রছাত্রী স্কিমের তালিকাভুক্ত বইগুলো পড়ে নিজেদের সমৃদ্ধ, মানবিক ও মূল্যবোধসম্পন্ন মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে পারবে।
কর্মশালায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচির কো-টিম লিডার জনাব শামীম আল মামুন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচির ডেপুটি টিম লিডার (প্রোগ্রাম) জনাব মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ।