চট্টগ্রাম ব্যুরো : চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় নৌবাহিনীর ঈশা খাঁ ঘাঁটির মসজিদে ৭ বছর আগে বোমা হামলা মামলায় জেএমবি’র ৫ সদস্যের মৃত্যুদন্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ আবদুল হালিমের আদালত বুধবার এই রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- নৌবাহিনীর সাবেক সদস্য এম সাখাওয়াত হোসেন, আবদুল মান্নান, রমজান আলী, বাবুল রহমান ওরফে রনি ও জেএমবি সদস্য আবদুল গাফফার।
এদের মধ্যে এম সাখাওয়াত হোসেন পলাতক রয়েছে।
২০১৫ সালের ১৮ ডিসেম্বর জুমার নামাজের সময় ১০ মিনিটের ব্যবধানে পতেঙ্গাস্থ নৌবাহিনীর ঈশা খাঁ ঘাঁটির ভেতরে দুটি জামে মসজিদে বোমা হামলার ঘটনা ঘটে। নৌবাহিনী সদস্যদের পাশাপাশি দুই মসজিদে শুক্রবার স্থানীয়রাও নামাজ আদায় করতেন।
বোমা বিস্ফোরণে সামরিক-বেসামরিক মোট ২৪ জন আহত হন। বোমা হামলার নয় মাস পর ২০১৬ সালের ৩ সেপ্টেম্বর নেভাল প্রভোস্ট মার্শাল কমান্ডার এম আবু সাঈদ বাদী হয়ে সন্ত্রাসবিরোধী ও বিস্ফোরক আইনে নগরীর ইপিজেড থানায় সন্ত্রাসবিরোধী ও বিস্ফোরক আইনে দু’টি মামলা দায়ের করেন।
মামলায় নৌবাহিনীর সাবেক সদস্য এম সাখাওয়াত হোসেন, বলকিপার আবদুল মান্নান, রমজান আলী ও বাবুল রহমান ওরফে রনিকে আসামি করা হয়।
জেএমবির চট্টগ্রাম অঞ্চলের প্রধান সমন্বয়ক রাইসুল ইসলাম খান নোমান ওরফে নাফিস ওরফে ফারদিনের নেতৃত্বে ওই বোমা হামলা চালানো হয় বলে মামলার এজাহারে বলা হয়।
মামলা সূত্রে জানা যায়, গ্রেপ্তার বোমা হামলাকারীদের জিজ্ঞাসাবাদ ও তদন্তে আবদুল মান্নানের বড় ভাই জেএমবি সদস্য আবদুল গাফফারের সম্পৃক্ততা পায় পুলিশ। ২০১৭ সালের ১৫ অক্টোবর আবদুল গাফ্ফারসহ ৫ জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র জমা দেন ইপিজেড থানার পরিদর্শক মুহাম্মদ ওসমান গণি। এতে পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ গঠন করা হয়।
ফারদিন ২০১৬ সালের ৩ এপ্রিল বগুড়া জেলার শেরপুরে গ্রেনেড বানাতে গিয়ে বিস্ফোরণে নিহত হন। এ কারণে তার নাম মামলার আসামি তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়।
অভিযোগপত্রে মোট ২৪ জনকে সাক্ষী করা হয়। চলতি বছরের ২৩ মার্চ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। মোট ২৪ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৭ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) এডভোকেট মানোরঞ্জন দাশ রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন।
আসামিপক্ষের আইনজীবী এডভোকেট মো. জালাল উদ্দীন এই মৃত্যুদন্ডের আদেশে অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, বোমা হামলার দীর্ঘদিন পরে মামলা করা হয়েছে। মামলার জব্দ তালিকা নেই, পাঁচ আসামির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নেই। ফলে এ রায়ের বিরুদ্ধে আমরা উচ্চ আদালতে যাবো।
