আবুল কাশেম, শাহজাদপুর (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি : প্রায় দেড় মাস অতিবাহিত হলেও আজও কাটেনি উত্তরবঙ্গের বিখ্যাত নৌ-বন্দর বাঘাবাড়ি নৌ-বন্দরের নাব্যতা সংকট। শুধু তাই নয় পুরো এক সপ্তাহ হলো নৌ-বন্দরে আসতে পারছে না কোন প্রকারের মালবাহী জাহাজ।

এ অবস্থা চলতে থাকলে আগামী ইরিগেশনে উত্তর বঙ্গের ১৬ জেলায় ১ দিকে দেখা দিবে সার সংকট, অপরদিকে দেখা দিবে তেল সংকট। কারণ, বাাঘাবাড়ি নৌ-বন্দরে বাফার গোডাউলে রাখা সার এবং পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা তেল কোম্পানীর সংরক্ষিত তেল দিয়েই ওই প্রয়োজনীয়তা মিটানো হয়ে থাকে।

সরেজমিন ঘুরে জানা গেছে, সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার বাঘাবাড়ি নৌ-বন্দর থেকে চট্টগ্রাম, মংলা নৌ-বন্দর রুটে পদ্মা, মেঘনা, যমুনা ও বড়াল নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে ডুবো চর জেগে উঠায় এ রুটে নাব্যতা সংকট সৃষ্টি হয়েছে। এতে বিভিন্ন নৌ-বন্দর থেকে রাসায়নিক সার, পাথর, সিমেন্ট, ক্লিংকার এবং জ্বালানী তেলবাহী কার্গো জাহাজ সম্পূর্ণ লোড অবস্থায় বাঘাবাড়ি নৌ-বন্দরে আসতে পারছে না।

প্রায় দেড় মাস এ জটিলতা থাকলেও ড্রাফ্ট কম-বেশির কারণে সামান্য মালামাল পরিবহন হতো। কিন্তু, প্রায় এক সপ্তাহ হলো এ জটিলতা চরম আকার ধারণ করেছে। এখন আর কোন জাহাজ/কার্গো বন্দরে আসতে পারছেনা। ফলে পাটুরিয়া ও বাঘাবাড়ির আগেই লাইটারেজের মাধ্যমে জাহাজ থেকে অর্থেকের ও কম মালামাল আনলোড করে খালাস করতে হচ্ছে। তবে সে মালামাল বাাঘাবাড়ি বন্দরে আনা সম্ভব হচ্ছে না।

তেলবাহী জাহাজ (কার্গো) থেকে তো সেই আনলোড করা সম্ভব হচ্ছে না। বাঘাবাড়ি নৌ-বন্দরের লোড-আনলোড কাজের সাথে জড়িত প্রায় ৬ শতাধিক শ্রমিক বন্দরে জাহাজ ভীড়তে না পারায় কর্মহীন হয়ে পরা এ সকল শ্রমিক মানবেতর জীবন-যাপন করছে। বন্দরে খেটে খাওয়া শত শত শ্রমিক জানায়, ‘ডুবো চরের কারণে বাঘাবাড়ি বন্দরে জাহাজ নান আসায় আমরা বেকার হয়ে পড়েছি।’

তারা অভিযোগ করে বলেন, ‘বিআইডব্লিউটিএ নজর না দেয়ায় এ সংকট সৃষ্টি হয়েছে এবং এখন পর্যন্তও কর্তৃপক্ষ কোন উদ্যোগ নেননি। চর নাকালিয়া, প্যাচাকোলা, মোল্লার চর, পাটুরিয়া এলাকায় নদীর পানি কমে যাওয়া এবং ডুবো চর জেগে উঠায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে তারা জানান।’

এ বিষয়ে বাঘাবাড়ি নৌবন্দর লেবার হ্যান্ডেলিং এজেন্ট আবুল হোসেন বলেন, কোট কোট টাকা দিয়ে নৌ-বন্দর ইজারা নিয়েছি। জাহাজ বন্দরে ভীড়তে না পাড়ায় এক দিকে ক্ষতিগ্রস্থ আমরা ইজারাদার পক্ষ, অপরদিকে বেকার হয়ে পড়েছে প্রায় ৬ শতাধিক শ্রমিক। তিনি দ্রুত বিআইডবিøউটি-এর উর্দ্ধতন কতৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

জানতে চাইলে বাঘাবাড়ি নৌ-বন্দর কর্মকর্তা ও বিআইডবিøউটিএ-এর উপ পরিচালক আসাদুজ্জামান বলেন, বাঘাবাড়ি নৌ-বন্দরের রুটে কোন নাব্যতা সংকট নেই। এ রুটে ৮ থেকে ১০ ফিট ড্রাফ্ট রয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী এ ড্রাফটে ৮/১০ ফিট ড্রাফটের জাহাজই চলার কথা। সেখানে ১০ থেকে ১২ ফিট ড্রাফ্ট নিলে সমস্যা হয়। এ ছাড়াও বন্দরটি দ্বিতীয় শ্রেণির হওয়ায় কিছু সমস্যা হচ্ছে। এটি প্রথম শ্রেণিতে উন্নত হলে আর সমস্যা থাকবে না। আর উদ্ভুত পরিস্থিতি নিরসনের জন্য দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।