মোঃ কামরুজ্জামান ভূঁইয়া, নোয়াখালী : নোয়াখালীর হাতিয়ার মেঘনা নদীতে নলেরচর থেকে ভোলার মনপুরা যাওয়ার পথে মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় ডালচর এলাকায় বরযাত্রীবাহী ট্রলার ডুবির ঘটনা ঘটে। এতে নববধু, নারী ও শিশুসহ এখন পর্যন্ত ৭ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়। এখনো বহু নিঁখোজ রয়েছে বলে স্থানীয়ভাবে জানা যায়।

হাতিয়ার নলের চরে বিয়ে অনুষ্ঠান শেষে নববধু নিয়ে বরসহ ট্রলার যোগে ভোলার মনপুরা যাওয়ার পথে ডালচর এসে পৌছঁলে মেঘনা নদীর তীব্র স্রোতের মুখে পড়ে ট্রলারটি ডুবে যায়। এতে নিহতরা হলেন- হাতিয়ার চানন্দী ইউনিয়নের থানার হাট এলাকার ইব্রাহীম সওদাগরের মেয়ে নববধু তাছলিমা (২০), হরনী ইউনিয়নের মোহম্মদপুর গ্রামের আক্তার হোসেনের মেয়ে আসমা বেগম (১৯), সদর উপজেলার বদরপুর গ্রামের আকবর হোসেনের মেয়ে আফরিনা আক্তার লামিয়া (৯), একই এলাকার আলমগির হোসেনের মেয়ে লিলি আক্তার (৮), নলেরচরের কালাদুর গ্রামের ফয়জ্জুল্লার মেয়ে হোসনে আরা বেগম (৫), চানন্দী ইউনিয়নের পূর্ব আজিম নগর গ্রামের আলা উদ্দিনের স্ত্রী রাহেনা বেগম (৩০), একই এলাকার খোরশেদ আলমের স্ত্রী নুরজাহান (৬৫)। হাতিয়ার ডালচরে ট্রলার ডুবির এ ঘটনা ঘটলেও প্রবল স্রোতে ৫টি লাশ ভেসে যায় লক্ষ্মীপুর জেলার রামগতিতে। জেলেরা নদীতে ভাসমান লাশগুলো দেখে তাদের উদ্ধার করে টাংকির ঘাটে নিয়ে আসে। পরে তারা রামগতি থানা পুলিশকেকে খবর দেয়। অপরদিকে ২ টি লাশ পাওয়া যায় চানন্দি ঘাটে। ট্রলারটি ডুবে যাওয়ার পরে অনেকে সাতরিয়ে ও অন্য ট্রলারের সহযোগীতায় তীরে উঠতে সক্ষম হলেও শিশুসহ অনেক নারী নিখোঁজ রয়েছে বলে নিহত নববধুর পিতা ইব্রাহীম সওদাগর জানায়। তিনি আরো জানান, তার মেয়ে তাছলিমার সাথে হাতিয়ার ঢালচরের বেলাল মেস্তুরীর ছেলে ফরিদ উদ্দিনের বিবাহ হয়। মঙ্গলবার তাছলিমাকে আনুষ্ঠানিকভাবে বরের বাড়ীতে নেওয়ার সময় এই দূর্ঘটনা ঘটে।

এদিকে দূর্ঘটনার পরপরই হাতিয়ার নৌ-পুলিশ ও কোষ্টগার্ড উদ্ধার অভিযানে নামে ।তবে সন্ধ্যা নেমে আসায় উদ্ধার অভিযান কিছুটা থেমে যায়।দুর্ঘটনা কবলিত ট্রলারটি উদ্ধার করে হাতিয়ার ডালচরে রাখা হয়েছে।

নৌ-পুলিশের ইনচার্জ আকরাম উল্লাহ জানান, রাত নেমে আসায় আমরা উদ্ধার অভিযান এখন বন্ধ রাখলেও সকালে আবার শুরু করবো।

হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: ইমরান হোসেন বলেন, নিহত ৭জনের পরিবারকে উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে ২০ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়ার সিদ্বান্ত দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া আরো মৃতদেহ পাওয়া গেলে তাদেরকেও অনুরুপ ভাবে আর্থিক সহযোগিতা দেওয়া হবে।

এই রিপোট লেখা পর্যন্ত চানন্দী ইউনিয়নের প্রশাসক আব্দুর রহিম জানান, নিহত উদ্ধার হওয়া ৫ জনের মৃতদেহ হরনী ইউনিয়নের টাংকির ঘাটে রাখা হয়েছে। অন্য দুইজনের মৃহদেহ চানন্দী ঘাটে রাখা হয়েছে। পুলিশ রাতেই তাদের মৃতদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে জানান।

রামগতি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ সোলায়মান ৭ জন নিহত হওয়ার তথ্য নিশ্চিত করেন। তবে এ দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত কতজন যাত্রী নিখোঁজ রয়েছে তার সঠিক সংখ্যা কেউ জানাতে পারেনি।