বগুড়া অফিস নন্দীগ্রাম প্রতিনিধি : বগুড়ার নন্দীগ্রাম মনসুর হোসেন ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষের নানা অনিয়মের কারণে এক বছরের অধিক সময় গভর্নিং বডি ছাড়াই পরিচালিত হচ্ছে কলেজের কার্যক্রম। এর ফলে অধ্যক্ষ এককভাবে কলেজ পরিচালনা করে কলেজের বিভিন্ন খাতের বিপুল অংকের টাকা আত্মসাত করেছেন। এ ব্যাপারে শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়েছে।

প্রাপ্ত অভিযোগে জানা গেছে, উক্ত কলেজের ২৪ জন শিক্ষক কর্মচারী গত ৩ জুন’ ২০২১ শিক্ষা সচিবের নিকট অধ্যক্ষের নানা অনিয়ম ও দূর্নীতির বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন।

অভিযোগে তারা বলেন, অধ্যক্ষ মোঃ সিরাজুল ইসলাম এক বছরের অধিক সময় গভর্নিং বডিবিহীন কলেজ পরিচালনা করছেন। গত ২০ মার্চ ২০১৬ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের এক স্বারক মূলে চার বছরের জন্য নিয়মিত কমিটি গঠিত হয়, যার মেয়াদ গত ১৯ মার্চ ২০২০ শেষ হয়েছে। ফলে গত ২০ মার্চ ২০২০ থেকে ১১ নভেম্বর ২০২০ পর্যন্ত যেকোন কমিটি বিহীন কলেজটি পরিচালিত হচ্ছে।

এ সময়ের মধ্যে কলেজে কোন নিয়মিত কমিটি বা কোন এডহক কমিটি গঠন করা হয় নি। এরপর ১২ নভেম্বর ২০২০ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের এক স্মারক মূলে ৫ সদস্য বিশিষ্ট এডহক কমিটি গঠন করা হয়। সেখানে ৪নং সদস্যকে শিক্ষকদের মধ্য থেকে নির্বাচনের মাধ্যমে শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচিত করে এডহক কমিটি গঠন এর কার্যক্রম সম্পন্ন করার নির্দেশনা থাকলেও, অধ্যক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে কোন শিক্ষক সদস্য মনোনীত করেননি। উক্ত এডহক কমিটিতে শিক্ষক সদস্য পদ শূন্য রেখেই কমিটির মেয়াদ শেষ হয়।

উপরিউক্ত স্মারক মূলে এডহক কমিটির মেয়াদ পত্র ইস্যুর তারিখ থেকে অনুর্ধ্ব ৬ মাস হবে এবং এ সময়ের মধ্যে নিয়মিত গভর্নিং বডি গঠন এর কার্যক্রম অবশ্যই সম্পন্ন করতে হবে মর্মে নির্দেশনা থাকলেও অধ্যক্ষ তা না করে গভর্নিং বডিবিহীনভাবে অদ্যবধি কলেজ পরিচালনা করছেন।

অধ্যক্ষ কলেজে কোন কমিটি গঠন না করেই, ছাত্র-ছাত্রী ভর্তির টাকা, ফরম ফিলাপের টাকা, কলেজ ফান্ডের টাকা, কলেজের ব্যাংক হিসাব হতে ইচ্ছামতো তুলে বিভিন্ন ভুয়া বিল ভাউচার তৈরি করে অর্থ আত্মসাৎ করছেন। বিগত জুলাই’২০১৬ মাস থেকে অদ্যবধি কলেজের অভ্যন্তরীণ অডিট হয় নি । তিনি কলেজের সমস্ত আয় তাঁর ইচ্ছামতো ব্যবহার করছেন।

অধ্যক্ষ কলেজের সার্বিক কর্মকান্ডে মাসের পর মাস বিভিন্ন ব্যক্তিকে মৌখিকভাবে দায়িত্ব দিয়ে বেশিরভাগ সময় ঢাকায় অবস্থান করেন। অবৈধভাবে উপাধ্যক্ষ নিয়োগ, শিক্ষক কর্মচারীদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ, অনিয়মতান্ত্রিকভাবে কলেজের জমি ও পুকুর পত্তনী সহ অর্থনৈতিক বিভিন্ন অনিয়মের বিরুদ্ধে ইতিপূর্বে স্থানীয় প্রশাসনের নিকট অভিযোগ দেয়া হয়েছে।

অভিযোগ প্রসঙ্গে অভিযুক্ত অধ্যক্ষ মো: সিরাজুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, সকল অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পুনরায় উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে সভাপতি করে নতুন অ্যাডহক কমিটি অনুমোদন দিয়েছে।

এ বিষয়ে এডহক কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার শিফা নুসরাত জানান, অভিযোগ আমি পেয়েছি । তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।