বগুড়া অফিস : বগুড়ার ধুনট উপজেলার সেই আলোচিত স্কুলছাত্রী ধর্ষণ মামলায় আবু সাঈদ শেখ (৬১) নামে স্থানীয় এক মাতব্বরকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ । তার বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলার বাদীকে হুমকি এবং মামলা আপোষের জন্য ভয়ভীতি প্রদর্শন সহ ধর্ষিতার পরিবারকে সমাজচ্যুত করায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

সোমবার বিকেলে ধুনট থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে ধুনট উপজেলার গোপালনগর ইউনিয়নের মহিশুরা বাজার এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। সে গোপালনগর ইউনিয়নের দেউরিয়া গ্রামের মৃত ওসমান শেখের ছেলে।

জানা গেছে, ধুনট উপজেলার দেউড়িয়া গ্রামের মজিবর রহমানের ছেলে মাসুদ রানা (৩৬) ও ইউপি সদস্য ফললুল হক বাবু (৪৫) সহ তার কয়েক সহযোগি একই গ্রামের এক কৃষকের মেয়ে গোপালনগর উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রীকে গত ১৬ জুলাই রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে সিএনজিযোগে অপহরন করে নিয়ে যায়। এরপর ওই মেয়েটিকে এক মাসেরও বেশি সময় একটা ঘরে আটকে রেখে ঘুমের ঔষধ খাইয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করা হয়। এ ঘটনায় গত ১২ আগষ্ট ওই ছাত্রীর মা বাদী হয়ে ধর্ষক মাসুদ রানা ও গোপালনগর ইউপি সদস্য ফজলুল হক বাবু সহ ৭ জনকে আসামী করে ধুনট থানায় মামলা দায়ের করেন।

তবে মামলা দায়েরের পর গত ২৪ আগষ্ট ওই স্কুলছাত্রীকে সিরাজগঞ্জের চান্দাইকোনা এলাকায় রাস্তার পাশে ফেলে রেখে যায় ধর্ষক মাসুদ রানা ও তার সহযোগিরা। পরে পুলিশ ওই ছাত্রীকে উদ্ধারের পর ডাক্তারি পরীক্ষায় ধর্ষণের প্রমাণ মেলে। এঘটনায় ধর্ষক মাসুদ রানা পলাতক থাকলেও এজাহারভুক্ত ২ নং আসামী ইউপি সদস্য ফজলুল হক বাবু সহ আরো দুই আসামীকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

এদিকে ধর্ষণ মামলা দায়ের করায় স্থানীয় কতিপয় মাতব্বর ওই ধর্ষিতার পরিবারকে মামলা তুলে নিতে বাদীকে বিভিন্ন হুমকি-ধামকি এবং মামলা আপোষ করতে বাদী পক্ষকে চাপ সৃষ্টি আসছিল।

এ ছাড়া স্থানীয় মাতব্বর আবু সাঈদ শেখসহ আরো কয়েক মাতব্বর ৩/৪ মাস ধরে ওই ধর্ষিতার পরিবারকে সমাজচ্যুত করে রেখেছে। এ বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হওয়ায় স্থানীয় মাতব্বর আবু সাঈদ শেখকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

ধুনট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কৃপা সিন্ধু বালা জানান, স্কুলছাত্রী ধর্ষণ মামলায় এ পর্যন্ত তিনজন আসামীকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। তন্মধ্যে ২নং আসামী ইউপি সদস্য ফজলুল হক বাবুকে দুই দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। এ ছাড়া ধর্ষণ মামলার বাদীকে হুমকি এবং মামলা আপোশ করতে চাপ সৃষ্টি এবং ধর্ষিতার পরিবারকে সমাজচ্যুত করায় আবু সাঈদ শেখ নামে স্থানীয় এক মাতব্বরকেও গ্রেফতার করা হয়েছে এবং মামলার প্রধান আসামীকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।