ফাইল ছবি

শেখ আজিজুল হক, গাজীপুর মহানগর : চার দিন বিরতির পর আজ শুক্রবার দ্বিতীয় ধাপে শুরু হচ্ছে ৫৬তম বিশ্ব ইজতেমা। এ ধাপের আয়োজক বিশ্ব তাবলিগ জামাতের দিল্লির (ভারত) ‘নিজামুদ্দিন মারকাজ’। মাওলানা সাদ কান্দলভি অনুসারীরা তাদের কেন্দ্রীয় দপ্তর ‘নিজামুদ্দিন মারকাজ’ কেন্দ্রিক দাওয়াতি কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। তাবলিগ জামাতে বিভক্তির পর বাংলাদেশের মাওলানা জোবায়েরপন্থী গ্রুপ বিশ্ব তাবলিগ জামাতের ‘আ’লমী শূরা’ ও মাওলানা সাদ কান্দলভিপন্থী গ্রুপ বিশ্ব তাবলিগ জামাতের ‘নিজামুদ্দিন মারকাজ’ নামে আলাদা পরিচয়ে কার্যক্রম চালাচ্ছেন। যদিও সাধারণ সাথীরা তাবলিগ জামাতের শত বছরের ঐক্যবদ্ধ ঐহিত্য ফিরিয়ে আনার পক্ষে। এর আগে গত রোববার আখেরি মুনাজাতের মাধ্যমে শেষ হয় প্রধম ধাপে আ’লমী শূরার তিন দিনের বিশ্ব ইজতেমা।

ইজতেমায় নিজাম উদ্দিন মারকাজের মিডিয়া সেল জানায়, আজ শুক্রবার ইজতেমা ময়দানের বৃহত্তর জুমার জামাতে মাওলানা সাদ কান্দলভির বড় ছেলে ইউসুফ বিন সাদ ইমামতি করবেন। মাওলানা সাদ কান্দলভির তিন ছেলে মাওলানা ইউসুফ কান্দলভি, মাওলানা সাঈদ কান্দলভি, মাওলানা ইলিয়াস কান্দলভি ও মেয়ে জামাতা মাওলানা হাসান গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় ইজতেমা ময়দানে এসে পৌছালে তাবলিগ জামাতের স্বাগতিক বাংলাদেশের সাথীরা ফুল দিয়ে তাদের অভ্যর্থনা জানান।

এদিকে আজ শুক্রবার থেকে দ্বিতীয় ধাপে বিশ্ব ইজতেমা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও গত বুধবার থেকেই দেশি-বিদেশি মুসল্লিরা ইজতেমা ময়দানে এসে নিজ নিজ এলাকার নির্ধারিত স্থানে অবস্থান নিচ্ছেন। প্রথম ধাপের মতই নির্ধারিত সময়ের আগেই মুসল্লিরা ময়দানে এসে অবস্থান নেওয়ায় গতকাল বৃহস্পতিবার থেকেই সমবেত মুসল্লিদের উদ্দেশ্যে তাবলিগ জামাতের মুরব্বিদের বয়ান শুরু হয়েছে।

বৃহস্পতিবার বাদ ফজর নিজামুদ্দিন মারকাজের মাওলানা চেরাগ উদ্দিন উর্দু ভাষায় বয়ান করেন এবং তরজমা করেন মাওলানা আজিমুদ্দিন। এর পর সকাল ১০টা থেকে নানা নির্ধারিত নানা কর্মসূচী শুরু হয়। কর্মসূচীর মধ্যে ছিল বিদেশী মেহমানদের মুজাকারার তালিকা, মধ্যপ্রাচ্য থেকে আসা আরবি ভাষাভাষীদের উদ্দেশ্যে বয়ান করেন পাকিস্থানের মাওলানা ওসমান, ইংরেজি ভাষাভাষীদের উদ্দেশ্যে বয়ান করেন এনামুল হক ও মো. খসরু মিয়া, মালয়েশিয়া থেকে আগত মেহমানদের সামনে বয়ান করেন মাওলানা ওমর ফারুক ও মাওলানা ওমর মেওয়াতি, ফারসি ভাষাভাষীদের উদ্দেশ্যে বয়ান করেন মুফতি গোলাম নবী ও মুফতি জহির উদ্দিন, থাইল্যান্ড থেকে আগত মুসল্লিদের উদ্দেশ্যে বয়ান করেন মাস্টার হারুন অর রশিদ, মাওলানা সাঈদী, চায়না থেকে আগত মেহমানদের সামনে বয়ান করেন মাওলানা জামশেদ ও মাওলানা আব্দুল্লাহ এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মেহমানদের উদ্দেশ্যে বয়ান করেন মাওলানা মোশারফ হোসেন।

একই সময় নিজামুদ্দিন মারকাজ কেন্দ্রিক বাংলাদেশে সময় লাগানো প্রায় ১০০ জামাতের মেহনতের কারগুজারী শুনেন মুফতি রিয়াসাত ও হারুন অর রশিদ। ইজতেমা ময়দানের বিভিন্ন নির্ধিরিত খিত্তায় এসব কর্মসূচী পালিত হয়। এ ছাড়া দুপুর সোয়া ১২টায় অন্যান্য কর্মসূচী বাস্তবায়নের বিষয়ে মুরব্বীরা মাশোয়ারা করেন।

তাবলীগের সাথী মো: হাবিবুর রহমান সোহেল জানান, গত মঙ্গলবার থেকে ইজতেমা ময়দানে বাংলাদেশের ৬৪ জেলার মারকাজ মসজিদের পয়েন্টের জামাত, খিত্তা জামাত, পাহারা জামাত, জুরনীওয়ালা জামাতে হেদায়েতী কথা হয়। ইতিমধ্যে বিশ্বের অর্ধ শতাধিক দেশ থেকে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার বিদেশী মেহমান ময়দানের বিদেশী কামরায় অবস্থান করছেন। দেশী জামাতগুলো ৬৪ জেলা ভিত্তিক খিত্তায় অবস্থান করছেন।

আজ শুক্রবার থেকে বিশ্ব মারকাজ মসজিদ ভারতের দিল্লী নিজামুদ্দিনের ও বাংলাদেশের তাবলীগ জামাতের কেন্দ্রীয় মারকাজ কাকরাইল মসজিদের শীর্ষ মুব্বীরা বয়ান রাখবেন। কিভাবে সারা বিশ্বের মানুষ মহান আল্লাহ তায়ালর হুকুম ও প্রিয় নবী হযরত মোহাম্মদ (সা:) এর সহীহ সুন্নত তরীকা সবার মাঝে এসে যায় সে বিষয়ে মুরব্বীরা বয়ান করবেন। প্রতিদিন থাকবে ফরজ বাদ পয়েন্টে তালিম তাসকিল যিকির আসকারসহ ইবাদত বন্দীগির বিভিন্ন কর্মসূচী।

আগামী রোববার সকালে বিদেশ সফর একসাল চারমাসের সফর এবং চিল্লা সাথীদের উদ্দেশে হেদায়েতী কথা হবে। তারপর আখেরি মুনাজাত হবে। মুনাজাতের পর দেশ বিদেশে সফরের জন্য যেই সমস্ত জামাত বের হবে তাদের রুক করা হবে।