এম. মনিরুজ্জামান, রাজবাড়ী প্রতিনিধি : রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলায় পদ্মা নদীতে ২১কেজি ওজনের ১টি কাতলা ও ২০ কেজি ওজনের একটি বোয়াল মাছসহ বিশাল আকৃতির ২টি মাছ ধরা পড়েছে। শনিবার দিবাগত ভোর রাতে দৌলতদিয়া ফেরি ঘাটরে অদুরে পদ্মা নদীতে জেলেদের জালে মাছ দুটি ধরা পড়ে। জেলেরা ওই ২টি মাছ বিক্রি করে ৭২ হাজার টাকা পেয়েছেন।

দৌলতদিয়া ফেরিঘাট এলাকার মৎস্য ব্যবসায়ী মাসুদ মোল্লা ২১ কেজি ওজনের বোয়াল মাছটি ২ হাজার ১০০ টাকা কেজি দরে কেনেন। আরেক ব্যবসায়ী চান্দু মোল্লা ১ হাজার ৩৫০ টাকা কেজি দরে কাতলা মাছটি কেনেন। মাসুদ মোল্লা বলেন, শনিবার দিবাগত রাতে সদর উপজেলার জৌকুড়ার শুকুর হালদারসহ কয়েকজন পদ্মায় মাছ ধরতে নামেন। শেষ রাতের দিকে পদ্মা-যমুনার মিলনস্থল গোয়ালন্দের দেবগ্রাম এলাকায় জালে বোয়াল মাছটি পড়ে। তাঁরা মাছটি নিয়ে দৌলতদিয়া ঘাট টার্মিনাল সংলগ্ন মাছ বাজারে আসেন। নিলামে সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে মাসুদ মোল্লা ও দুই ভাগীদার ২ হাজার ১০০ টাকা কেজি দরে ৪৪ হাজার ১০০ টাকায় মাছটি কেনেন। রোববার ১২টার দিকে তাঁরা ঢাকার ধানমন্ডি এলাকার এক ব্যবসায়ীর কাছে ২ হাজার ২০০ টাকা কেজি দরে মাছটি বিক্রি করেন।

মাসুদ মোল্লা বলেন, গত বছর পদ্মা নদীতে ২০ কেজি ওজনের একটি বোয়াল ধরা পড়েছিল। এ বছর প্রথম এত বড় বোয়াল ধরা পড়েছে। মাসুদ ওই জেলের কাছ থেকে ৭ কেজি ওজনের আরও দুটি আইড় মাছ ১ হাজার ৩০০ টাকা কেজি দরে কেনেন। এবং পরে তা স্থানীয়দের কাছে ১ হাজার ৪০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেন।

একই রাতে পদ্মায় জেলেদের জালে ২১ কেজি ওজনের আরো ১টি বিশাল আকৃতির কাতলা মাছ ধরা পড়ে। রোববার সকালে দৌলতদিয়ার ৫ নম্বর ফেরিঘাটের অদুরে পদ্মায় শনিবার রাতে কালিপদ হলদারের জালে ২১ কেজি ওজনের কাতলা মাছটি ধরা পড়ে।

অন্যদিকে দৌলতদিয়া মাছ বাজার থেকে আরেক মৎস্য ব্যবসায়ী চান্দু মোল্লা ২১ কেজি ২০০ গ্রাম ওজনের কাতলা মাছটি ২৮ হাজার ৩৫০ টাকায় কেনেন। পরে রোববার বেলা দুইটার দিকে মাছটি দৌলতদিয়ার ৫ নম্বর ফেরিঘাটের পন্টুনের সঙ্গে রশি দিয়ে বাঁধা ছিল। স্থানীয় দুলাল মন্ডলের আড়ত থেকে মাছটি তিনি কিনেছেন। চান্দু মোল্লা বলেন, মাছটি কিনে ফেসবুকে আপলোড দিয়েছে। ঢাকার বিভিন্ন পরিচিত ব্যবসায়ী, রাজনৈতিক নেতাসহ অনেকের সঙ্গে যোগাযোগ করছি। ১ হাজার ৪০০ টাকা কেজি দর পেলে বিক্রি করে দেব মাছটি

গোয়ালন্দ উপজেলার মৎস্য কর্মকর্তা রেজাউল শরীফ বলেন, ‘পদ্মায় দেশীয় প্রজাতির বড় বড় মাছ পাওয়া যাচ্ছে। এ ধরনের বড় মাছ সংরক্ষণ করা খুবই দরকার। এগুলোর বিচরণের জন্য অভয়াশ্রম করতে পারলে মাছের প্রজননে কোনো সমস্যা হতো না। সম্প্রতি উপজেলার মাসিক সমন্বয় সভায় বিষয়টির গুরুত্ব তুলে ধরেছি।’

গোয়ালন্দ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা রোজাউল শরীফ আরো জানান, গোয়ালন্দের পদ্মা এখন ইলিশ মাছের জন্য গর্ব নয়। সেখানে ইলিশ মাছের বদলে প্রায়ই জেলেদের জালে ধরা পরছে বড় বড় রুই, ব্রিগেট, পাঙ্গাশ ও কাতলা মাছ। তাতে জেলেদের অল্প পরিশ্রমে দিনে অন্তত একটা বড় মাছ শিকার করতে পারলেই বেশি লাভ হচ্ছে। তাই জেলেরা এখন ইলিশ ধরার জাল বদলে নদীতে বের জাল ফেলছে।