এম. মনিরুজ্জামান, রাজবাড়ী প্রতিনিধি : ডাস্টার দিয়ে আঘাত করে শিশু শিক্ষার্থীর মাথা ফাটিয়েছেন রাজবাড়ী জেলা সদরের ৫৭ নম্বর মূলঘর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা চৌধুরী ফরিদা আক্তার।
উর্মি (৯) নামে ওই শিশু শিক্ষার্থীর মাথা ফাটানোর দায় স্বীকার করেছেন ফরিদা আক্তার। তবে অভিযোগ উঠেছে, বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চলছে।
গত রোববার (২৭ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিদ্যালয়ের শ্রেণীকক্ষে এ ঘটনা ঘটে।
উর্মি ওই বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী।
আহত উর্মি রাজবাড়ী সদর উপজেলার মূলঘর ইউনিয়নের পারসাদীপুর গ্রামের ভ্যানচালক আয়নাল শেখের মেয়ে। উর্মিকে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে মাথায় ২টি সেলাই দেওয়া হয়েছে। শিক্ষার্থী উর্মির মা মোছা. শিল্পী খাতুন জানান, আমার মেয়েকে ডাস্টার দিয়ে শিক্ষিকা ফরিদা আক্তার মাথায় আঘাত করেছেন। এতে তার মাথা ফেটে গেছে।
উর্মির বাবা আয়নাল শেখ জানান, মেয়ের মাথা ফাটিয়ে দেওয়ার খবর পেয়ে তাকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক তার মাথায় ২টা সেলাই দিয়েছেন। সোমবার (২৮ মার্চ) স্কুলের স্যাররা আমাদের বিষয়টা নিয়ে আলোচনার জন্য ডেকেছিলেন, কিন্তু আলোচনায় কোন ফল হয় নাই।
অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষিকা চৌধুরী ফরিদা আক্তার জানান, রোববার (২৭ মার্চ) ২য় শ্রেণির গণিত ক্লাস চলছিল তখন ৩য় শ্রেণির কয়েকজন শিক্ষার্থী ক্লাসের বাইরে থেকে পরবর্তী ক্লাসের জন্য রুমে প্রবেশ করতে চাচ্ছিল। তাদের একাধিকবার নিষেধ করা হলেও শোনেনি। একপর্যায়ে হাতের ডাস্টারটি অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে উর্মির মাথায় লাগে। এ ঘটনায় আমি অনুতপ্ত। আমার অনেক খারাপ লেগেছে।
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ইলিয়াস মিয়া জানান, ঘটনাটি অনাকাঙ্ক্ষিত। এমন ঘটনায় আমরা অনুতপ্ত। তবে আমরা শিক্ষার্থীর লেখাপড়ার ব্যাপারে সতর্ক।
সহকারী শিক্ষিকা জেসমিন আক্তার জানান, আমরা সব সময় শিশুদের মাতৃস্নেহে পড়ালেখা করাই। শিশুদের আমরা নিজের সন্তানের মতো ভালোবাসি।
৫৭ নম্বর মূলঘর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মফিজুল ইসলাম জানান, ঘটনাটি অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে ঘটেছে। শিশুটির সব ধরনের চিকিৎসাসেবা বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে দেওয়া হবে। পাশাপাশি শিশুটি লেখাপড়ার সব ধরনের সুযোগ সুবিধা পাবে। আমরা এমন ঘটনায় অনুতপ্ত।
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সাহিদা খাতুনের কাছে ঘটনার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের ওপরে রাগান্বিত হয়ে বলেন, আমরা বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করছি। আপনারা এখন যান।
রাজবাড়ী সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. আব্দুস সালাম মণ্ডল বলেন, ঘটনাটি জানতে পেরেছি। শিক্ষার্থীকে সব ধরনের চিকিৎসা করাতে বলা হয়েছে। ঘটনা তদন্ত করে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।