এম মাঈন উদ্দিন, মিরসরাই (চট্টগ্রাম) : তিন দিনের ব্যবধানে চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে ফের ডিমের দাম বেড়েছে ডজনে ১৫ থেকে ১৮ টাকা। মঙ্গলবার আবারো ফিডের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে দাম আরো বাড়তে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। উপজেলার বিভিন্ন বাজারে তিনদিন আগেও এক ডজন ডিম বিক্রি হয়েছে ১২০ টাকায়। এখন বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ থেকে ১৩৮ টাকায়। উপজেলার বারইয়ারহাট, জোরারগঞ্জ, মিঠাছড়া ও মিরসরাই সদরের পৌর বাজারে গিয়ে এ চিত্র দেখা গেছে।

বারইয়ারহাট পৌর বাজারের নিজাম উদ্দিন ডিমের আডতের মালিক নিজাম উদ্দিন বলেন, গত ৫দিন ধরে ডিম বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। আমি এক ডজন ডিম ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকা বিক্রি করছি। খামারি থেকে কিনেছি এক ডজন ডিম কিনেছি ১১৮ টাকা করে। এর সাথে পরিবহন ভাড়া ও শ্রমিকের মজুরী রয়েছে। ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকায় বিক্রি করতে না পারলে আমাদের লাভ হবে না।

খাজা ডিমের আড়তের স্বত্ত্বাধিকারী ওমর ফারুক বলেন, খামারি থেকে ১০০ ডিম কিনেছি ৯৭০ টাকা করে। তাই ১১০০ থেকে ১১৫০ টাকা ১০০ ডিম বিক্রি করছি। তারমধ্যে অনেক ডিম নষ্ট পড়ে, ভেঙ্গে যায়। এগুলোর হিসেবে তো কেউ করে না।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বিভিন্ন দোকানে খুচরা প্রতি পিস ডিম বিক্রি হচ্ছে ১১ থেকে ১২ টাকায়। মিঠাছড়া অর্জুন স্টোরের মালিক অর্জুন চন্দ্র নাথ বলেন, দু’এক পিস ডিম হলে ১২ টাকায় বিক্রি করছি। আর যদি এক ডজন নেয় তাহলে ১১ টাকা থেকে ১১ টাকা ৫০ পয়সায় বিক্রি করা হচ্ছে। একইভাবে উপজেলার ১৬ ইউনিয়ন দুই পৌরসভায় অবস্থিত বাজারের খুচরা দোকানে এই দামে ডিম বিক্রি করা হচ্ছে।

এদিকে মুরগীর খাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় খামারিরা লোকসানে রয়েছে বলে জানান একাধিক খামারি।

উপজেলার ওয়াহেদপুর ইউনিয়নের তুহিন এগ্রোর মালিক আব্দুল আউয়াল তুহিন বলেন, ডিম উৎপাদনে খরচ অনেক বেড়ে গেছে। তাই বাধ্য হয়ে গত ৬মাস ধরে আমি এই ব্যবসা আর করছি না। মুরগীর শেড অন্যকে ভাড়া দিয়ে দিয়েছি।

উপজেলার করেরহাট একরাম পোলট্রির স্বত্ত্বাধিকারী মো. একরামুল হক বলেন, আমার খামারে ৮ হাজার লেয়ার মুরগী রয়েছে। প্রতিদিন ৬হাজার ৫শ ডিম উৎপাদন হচ্ছে। প্রতি পিস ডিমে উৎপাদন খরচ পড়ছে ৯টাকা ৭০ পয়সা। আমরাও পাইকারীভাবে ৯ টাকা ৭০ পয়সা বিক্রি করতে হচ্ছে। এছাড়া গত মঙ্গলবার আবারো ফিডের দাম বেড়ে গেছে। এবার বাধ্য হয়ে আরো বেশি দামে বিক্রি করতে হবে।

চৌধুরী এগ্রোর স্বত্ত্বাধিকারী সাইফুদ্দীন চৌধুরী মাসুদ বলেন, দফায় দফায় মুরগী খাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারছিনা। শুধু চলতি বছরে প্রতিকেজি খাদ্যে দাম বেড়েছে ১৮ টাকা। ডিমের উৎপাদন খরচও অনেক বেড়ে গেছে। আমি গতকাল ৯ টাকা ৬০ পয়সা করে প্রতিপিস ডিম বিক্রি করেছি। আমার খামারে ৩ হাজার ৫শ মুরগী রয়েছে। প্রতিদিন ২৯শ ডিম উৎপাদন হয়ে থাকে।