শরীয়তপুর প্রতিনিধি : জাজিরার পূর্ব নাওডোবা আ্যাম্বিশন কিন্ডার গার্টেনের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র শাকিল মাদবরকে ক্রিকেট খেলার কথা বলে ডেকে নিয়ে মুক্তিপণ দাবী পরবর্তী হত্যা ও লাশ গুম করার অপরাধে ২জনকে মৃত্যুদন্ডাদেশ দিয়েছে আদালতের বিচারক। আজ মঙ্গলবার শরীয়তপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক আঃ ছালাম খান আসামীদের উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন।

মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামীরা হলো ইমরান মোড়ল ও সাকিব বাবু। মামলার অপর ৪ আসামীকে বেকসুর খালাস প্রদান ও একজনের উচ্চ আদালতে আপীল থাকায় তার রায় স্থগিত রাখা হয়েছে।

মামলা সুত্রে জানা গেছে, শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার পূর্ব নাওডোবা আ্যাম্বিশন কিন্ডার গার্টেনের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র শাকিল মাদবরকে ক্রিকেট খেলার নাম করে ২০২০ সালের ২৫ জুন অপহরণ করা হয়। পরবর্তীতে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ৫ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবীতে শাকিলকে হত্যা করে পদ্মা সেতুর ৩৯ নং পিলারের নিকট মাটি চাঁপা দিয়ে লাশ গুম করে অপহরণকারীরা।

এই বিষয়ে শাকিলের পিতা ছালাম মাদবর জাজিরা থানায় অভিযোগ করে। অভিযোগের ভিত্তিতে শাকিলকে ক্রিকেট খেলতে ডেকে নেওয়া শাকিব বাবুকে আটক করে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করে। সাকিব বাবুর দেখানো মতে শাকিলের লাশ উদ্ধার করা হয় এবং ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত ৭ জনকে আসামী করে জাজিরা থানায় মামলা হয়। মামলার সাক্ষ্য প্রমান শেষে আজ ১২ এপ্রিল মঙ্গলবার শরীয়তপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক আঃ ছালাম খান আসামীদের উপস্থিতিতে ইমরান মোড়ল ও সাকিব বাবুকে মৃত্যুদন্ডাদেশ ঘোষণা করেন।

অপর আসামী আক্তার মাদবর, সজিব মাঝি, মহসিন হাওলাদার, স্বপন সরদারকে বেকসুর খালাস প্রদান করেছেন ট্রাইব্যুনাল। আসামী বাবু ফরাজীর উচ্চ আদালতে আপীল থাকায় তার রায় স্থগিত রাখা হয়েছে। উচ্চ আদালতের আপীল নিস্পত্তি হলে বাবু ফরাজীর রায় ট্রাইব্যুনাল ঘোষণা করবেন। এই রায়ে রাষ্ট্র পক্ষ ও আসামী পক্ষ ন্যায় বিচার বঞ্চিত হয়েছেন তাই উচ্চ আদালতে যাবেন বলে জানিয়েছেন।

মামলার বাদী ছালাম মাদবর বলেন, আমি এই রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করছি। আমি উচ্চ আদালতে আপিল করবো।

রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবী পিপি এডভোকেট ফিরোজ আহমেদ বলেন, একটি লোমহর্ষক ঘটনা ছিল। মামলায় আসামীদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতেই অন্যান্যরা আসামী হয়েছে। বাদী, ডাক্তার ও তদন্ত কর্মকর্তা সাক্ষ্য দিয়ে মামলার প্রমান করেছে। আজ সেই মামলায় দুই জনকে মৃত্যুদন্ড দিয়ে অপর ৪ জনকে খালাস প্রদান করেছেন ট্রাইব্যুনাল। বাদী উচ্চ আদালতে যাওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেছেন। আমি তার সাথে সহমত প্রকাশ করছি।

আসামী পক্ষের আইনজীবী এডভোকেট মিজানুর রহমান মুরাদ, আমার আসামীরা ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছে। ট্রাইব্যুনালের এই আদেশের বিরুদ্ধে আমরা উচ্চ আদালতে যাবো এবং আমার আসামী খালাস পাবে বলে আমি আশাবাদী।