মিজানুর রহমান মিজান, রংপুর অফিস : রংপুরের পীরগাছায় ছয় মাস ঘর সংসার করার পরেও স্ত্রীর স্বীকৃতি মিলছে না এক কলেজছাত্রীর। এ ঘটনায় স্ত্রীর স্বীকৃতির দাবিতে গত ১২ দিন থেকে ছেলের বাড়িতে অনশন করছেন ওই কলেজছাত্রী।
বুধবার (৯ জুন) সকালে উপজেলার তাম্বুলপুর ইউনিয়নের সোনারায় কারবালা গ্রামের হরিশ চন্দ্র বর্ম্মণের বাড়িতে গিয়ে এ চিত্র দেখা যায়। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হরিশ চন্দ্র বর্ম্মনের ছেলে পংকজ কুমার বর্ম্মণের সঙ্গে তার মামাতো বোন ওই কলেজছাত্রীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে।
গত ছয় মাস আগে ওই শিক্ষার্থীকে গোপনে শাঁখা-সিঁদুর পড়িয়ে স্ত্রীর মর্যাদা দেয় পঙ্কজ। পরে রংপুর শহরের আলমনগর খামারপাড়া এলাকায় একটি বাসা ভাড়া নিয়ে সংসার শুরু করেন তারা।
পড়ালেখার সুবাদে তারা আগে থেকেই রংপুরে থাকায় বিষয়টি পরিবারের লোকজন জানতে পারেনি। সম্প্রতি বিষয়টি ফাঁস হলে সমাধানের জন্য তাদেরকে নিজ বাড়িতে নিয়ে আসে ছেলের পরিবার।
পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ছেলেকে লুকিয়ে রেখে মেয়েটিকে মারপিট করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়া হয় বলে অভিযোগ রয়েছে ভুক্তভোগী কলেজ ছাত্রী। এ সময় স্থানীয় লোকজন বিষয়টি জানতে পেরে মেয়েটিকে উদ্ধার করে ছেলের বাড়িতে রেখে আসেন।
ভুক্তভোগী কলেজছাত্রী জানান, পংকজ কুমার তার ফুফাতো ভাই। দীর্ঘ এক বছর প্রেমের সম্পর্কের পর ছয় মাস আগে ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী বিয়ে করে একই সাথে রংপুর শহরে বাসা ভাড়া নিয়ে ঘর সংসার করে আসছিল।
সম্প্রতি তাকে ছেলের বাড়িতে উঠিয়ে নেয়ার জন্য নিয়ে আসে ছেলেটি। কিন্তু তাকে স্ত্রীর মর্যাদা না দিয়ে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করে।
স্থানীয়রা জানান, পংকজ কুমারের মা ওই ছাত্রীকে ছেলের স্ত্রী হিসেবে মেনে না নেওয়ায় গত ১১দিন থেকে সমাধান করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে ওই ছাত্রী ছেলের বাড়িতে স্ত্রীর মর্যাদার দাবীতে অনশন করছে।
পীরগাছা উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি তরুণ কুমার রায় বলেন, ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী বিয়ে সম্পন্ন করেছে তারা। শুধু আনুষ্ঠানিকতা বাকি রয়েছে। যেহেতু ছেলেমেয়ে উভয়ে সাবালক তাই বিষয়টি জরুরি ভিত্তিতে সমাধান করা উচিত।
তাম্বুলপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আব্দুল গফুর বলেন, ছেলে পক্ষ রাজী না থাকায় সমাধান করা সম্ভব হচ্ছে না। তবু বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অবগত করা হয়েছে।
পীরগাছা থানার ওসি আজিজুল ইসলাম জানান, স্থানীয়ভাবে বিষয়টি আমাকে জানানো হয়েছে। সমাধানের চেষ্টা চলছে। তবে সমাধান না হলে অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।