খোলাবার্তা২৪ ডেস্ক : গোপালগঞ্জের শেখ হাসিনা সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজে ৫৮ জন ছাত্রী ছয় মাস ক্লাস করার পর জানতে পেরেছে, তাদের ভর্তিই করা হয়নি৷ যদিও তারা ভর্তি ফি ব্যাংকে জমা দিয়েছে৷

বুধবার দুপুরে গোপালগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে এসব শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন৷ তারা ওই বিদ্যালয়ে লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ দাবি করেন৷ পরে সেখানে এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন অভিভাবক মো. শহীদুল ইসলাম খান৷

শহীদুল ইসলাম খান বলেন, ৫৮ শিক্ষার্থী নিয়মিত ক্লাস করে আসছিল৷ হঠাৎ করে তাদের ভর্তি অবৈধ উল্লেখ করে স্কুলে যেতে দেওয়া হয় না৷ অর্ধ-বার্ষিক পরীক্ষায় অংশ নিতে বাধা দেয় কর্তৃপক্ষ৷ বছরের অর্ধেক সময় অতিবাহিত হওয়ার পর এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ায় শিক্ষার্থীরা অন্য স্কুলে ভর্তি হতে পারবে না৷ এতে শিক্ষার্থীরা মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে৷ এসব শিক্ষার্থী যাতে পরীক্ষায় অংশ নিতে পারে সেজন্য তিনি প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন৷ ৫৮ শিক্ষার্থীদের মধ্যে ষষ্ঠ শ্রেণির ১৩ জন, সপ্তম শ্রেণির ১৮ জন, অষ্টম শ্রেণির ১৬ জন ও নবম শ্রেণির রয়েছে ১১ জন৷

অভিভাবক হাবিবুর রহমান ও আরিফা পারভীন বলেন, গত ৫ এপ্রিল অধ্যক্ষ হুমায়রা আক্তার আকস্মিকভাবে বদলি হয়ে যান৷ তিনি ৫৮ শিক্ষার্থীর ভর্তি অনুমোদন করেন৷ তিনি চলে যাওয়ার পর শাহানাজ রেজা এ্যানি নতুন অধ্যক্ষ হিসেবে যোগ দেন৷ এরপর ওই ৫৮ শিক্ষার্থীকে অতিরিক্ত হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়৷

বর্তমান অধ্যক্ষ শাহানাজ রেজা এ্যানির সঙ্গে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি৷ এমনকি এসএমএস পাঠালেও তিনি তার জবাব দেননি৷

সাবেক অধ্যক্ষ হুমায়রা আক্তার বলেন, যে ৫৮ শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিল করা হয়েছে, এটা দুঃখজনক৷

হুমায়রা আক্তার বলেন, ‘‘আমি ব্যাংকে চিঠি দিয়ে ভর্তির টাকা নিতে নিষেধ করি কিন্তু স্কুলের কিছু শিক্ষক ও কর্মচারীর যোগসাজশে এ কাজটি হয়েছে৷ আমি এ বিষয়ে তদন্ত করার জন্য কমিটি গঠন করেছিলাম৷ কিন্তু বদলিজনিত কারণে এটি আর আগায়নি৷ বরং আমার বিরুদ্ধে আর্থিক সুবিধা নেওয়ার অভিযোগ তোলা হয়েছে, যা সঠিক নয়৷ আমি পূর্বপরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের শিকার৷’’

গোপালগঞ্জের ডিসি শাহিদা সুলতানা ওই ছাত্রীরা ‘অবৈধভাবে ক্লাস করছিল’ বলে মন্তব্য করে বলেন, ‘‘যে ৫৮ শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিলের কথা বলা হচ্ছে তারা এ স্কুলের শিক্ষার্থীই না৷ স্কুলে তাদের কোনো কাগজপত্রই জমা নাই৷ হাজিরা খাতায় তাদের নাম নাই৷ তারা অবৈধভাবে স্কুলটিতে ক্লাস করছিল৷এ ব্যাপারটি শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে জানানো হয়েছে৷ তারা বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন৷’’

এদিকে অভিভাবকরা দাবি করেছেন, তারা সব কাগজপত্র সময়মতই জমা দেন৷ আর ছাত্রীরা ক্লাসে নিয়মিত হাজিরা দিয়েছে৷ – ডয়চে ভেলে