নিজস্ব প্রতিবেদক : ছাড়পত্র ছাড়াই সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের কাজ শুরু করার পরামর্শের সাথে আমরা একমত নই। বরং ছাড়পত্র প্রদানের জন্য নির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেয়ার মাধ্যমে ইতিবাচকভাবে এই সমস্যার সমাধানের পক্ষেই আমরা।

দেশের ৫০ জন বিশিষ্ট পরিবেশ সংরক্ষণকামী নেতৃবৃন্দ এক বিবৃতিতে একথা বলেছেন।

“অতি সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর একটি সিদ্ধান্ত-নির্দেশ গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে তার পরিপ্রেক্ষিতে অভিমত ব্যক্ত করতে গিয়ে দেশের ৫০ জন বিশিষ্ট পরিবেশ সংরক্ষণকামী একথা বলেছেন। তারা বলেন, মিডিয়ার মাধ্যমে আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে যে প্রধানমন্ত্রী কোনো উন্নয়ন প্রকল্পের উপর পরিবেশগত মতামত বা ছাড়পত্র পেতে যদি অযৌক্তিক বিলম্ব হয় তাহলে ছাড়পত্র ছাড়াই সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের কাজ শুরু করার পরামর্শ দিয়েছেন।

এ ব্যাপারে দেশের এই ৫০জন বিশিষ্ট পরিবেশ সংরক্ষণকামী নেতৃবৃন্দ তাদের বক্তব্যে আরো বলেন, বিলম্বিত ছাড়পত্রের কারণে সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের অনাকাংখিত খরচ এবং দেশের জনগণের উপর ঋণের বোঝা বৃদ্ধি পায়। কিন্তু সে কারণে ছাড়পত্র ছাড়াই সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের কাজ শুরু করার পরামর্শের সাথে আমরা একমত নই। আমরা বরং মনে করি যে, ছাড়পত্র প্রদানের জন্য নির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেয়ার মাধ্যমে ইতিবাচকভাবে এই সমস্যার সমাধান করা যায়। পাশাপাশি, সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের পরিবেশ অভিঘাত সংক্রান্ত মূল্যায়ন নিরপেক্ষ, বস্তুনিষ্ঠ ও সততার সাথে প্রণীত হচ্ছে কিনা সেদিকে নজর দেয়া প্রয়োজন।

বর্তমানে এসব মূল্যায়ন অনেক ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ বিজ্ঞান ভিত্তিক করা হয়না বা দায়সারা ভাবে প্রণীত হওয়ার অভিযোগ পাওয়া যায়। জাতিসংঘের স্থায়িত্বশীল উন্নয়ন অভীষ্ঠমালার অধীনে পরিবেশ রক্ষার প্রতি সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। পরিবেশ ছাড়পত্রের বিষয়ে শৈথিল্যের ধারায় নয়, বরং স্বল্প সময়ে দক্ষতা এবং আন্তরিকতার সাথে পরিবেশ ছাড়পত্রের প্রণয়ন নিশ্চিত করার ধারাতেই কেবল স্থায়িত্বশীল উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি পালন এবং দেশের পরিবেশ রক্ষা করা সম্ভব। তাই আমরা উপর্যুক্ত সিদ্ধান্ত-নির্দেশটি পুনর্বিবেচনার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছি।

বাস্তবে যে কোনো প্রকল্পের সঠিক ও পরিবেশ অনুক‚ল ছাড়পত্র ছাড়া কাজ শুরু করা কোনো কাক্সিক্ষত বিষয় হতে পারে না। বিবৃতিতে দারা দ্রুততার পাশাপাশি সম্পূর্ণ পরিবেশসম্মত ছাড়পত্র বাধ্যতামূলক ও নিশ্চিত করা এবং পরিবেশ অধিদপ্তরকে আরও দায়িত্বশীল করে তোলার বিষয়টি মূখ্য বিবেচনায় রাখার জন্যও প্রধানমন্ত্রীর প্রতি বিশেষভাবে অনুরোধ জানান।

বিবৃতিতে স্বাক্ষরদানকারী হলেন, সুলতানা কামাল, ড. নজরুল ইসলাম, রাশেদা কে. চৌধুরী, ড. আতিউর রহমান,  মোবাশ্বের হোসেন, অধ্যাপক নূর মোহাম্মদ তালুকদার, ডা. মো. আব্দুল মতিন, অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ, ড. ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ, অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, ড. বদিউল আলম মজুমদার, অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, অধ্যাপক এম. এম. আকাশ, মহিদুল হক খান, শরীফ জামিল, মিহির বিশ্বাস, মো. শাহজাহান মৃধা, স্থপতি ইকবাল হাবীব, আলমগীর কবির, বিধান চন্দ্র পাল, শারমীন মুরশীদ, হাসান ইউসুফ খান, অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার, মারুফ হোসেন, স্থপতি সালমা এ শাফী, মো. তোফাজ্জল আলী, ড. মাহবুব হোসেন, রুহীন হোসেন প্রিন্স, এ. কে. এম মিজানুর রহমান, অধ্যাপক ড. সালেহ আহমেদ তানভীর, ফরিদা আকতার, জেরিনা হোসেন, অধ্যাপক আমিরুল আলম খান, ড. আদিল মোহাম্মেদ খান, ফাদার যোষেফ গোমেজ ওমী, সনজীব দ্রং, এম এস সিদ্দিকী, আতাউর রহমান মিটন, আমিনুর রসূল, ইবনুল সাঈদ রানা, আব্দুল করিম কিম, তোফাজ্জল সোহেল, মো. রফিকুল আলম, ফরিদুল ইসলাম ফরিদ, জিয়াউর রহমান, জামাত খান, ড. মনজুরুল কিবরিয়া, ফজলুল কাদের চৌধুরী, নূর আলম শেখ ও এস. এম মিজানুর রহমান।