আব্দুর রাজ্জাক, ঘিওর (মানিকগঞ্জ) : দুই উপজেলার সীমান্তবর্তী একটি গ্রাম করচাবাধা। জেলা সদর থেকে এ গ্রামের দূরত্ব মাত্র ৭ কিঃমিঃ। বর্তমান সরকার উন্নয়নের ক্ষেত্রে যোগাযোগের উপর বেশ গুরুত্ব দিলেও এই জনপদটির অবস্থা যেন বাতির নিচে অন্ধকার।

ঘিওর উপজেলার বানিয়াজুরী ইউনিয়ন এবং মানিকগঞ্জ সদরের নবগ্রাম ইউনিয়নের মাঝামাঝি সীমান্তে অবস্থান এই গ্রামের। এরাস্তা দিয়ে করচাবাধা, শৈলকুড়া, গোয়ালডাঙ্গি, নয়াচর, মুগুরভাংঙ্গা, রামদিয়া, দৌলা, নালী, নবগ্রাম এলাকার প্রায় ৪-৫ শত লোক প্রতিদিন যাতায়াত করে।

সরজমিন দেখা যায়, শৈলকুড়া হতে করচাবাধা ঈদগাহ্ মাঠ পর্যন্ত ইট সোলিংয়ের ভাঙ্গাচোরা রাস্তা থাকলেও তারপর থেকে করচাবাধা পুরাতন জামে মসজিদ ও খালপাড় ব্রীজ পর্যন্ত কাঁচা রাস্তার অবস্থা খুবই নাজুক। এ রাস্তায় রিক্সা ভ্যানে যাতায়াত তো দূরের কথা । এলাকার মানুষের পায়ে হেটে চলাচলও দুঃষ্কর হয়ে পরেছে। স্থানীয় কৃষকদের উৎপাদিত পণ্যসামগ্রী বিক্রির জন্য পরিবহন ব্যবস্থা কার্যত অচলাবস্থার জন্য তিনগুণ অর্থ অপচয় হচ্ছে। দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাট বাজার, মাদ্রাসা-মসজিদে যাতায়াতের বেলায় কোমলমতি শিক্ষার্থীসহ এলাকার শতশত নারী পুরুষ, দিনমজুর, চাকুরীজীবীসহ বিভিন্ন পেশার জনগণ এই কাঁচা রাস্তার কাঁদা পানিতে চরম দূর্ভোগের স্বীকার হয়ে পথ চলছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ রাস্তাটি সংস্কারে আশু পদক্ষেপ নেবেন এটাই এলাকাবাসীর প্রাণের দাবী।

এ গ্রামের বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা খোরশেদ আলম জানান, সামান্য বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতায় পায়ে হেটে চলা খুবই কষ্টকর। স্বাধীনতার পর থেকে বিভিন্ন জনপ্রতিনিধি শুধু আশ্বাসের বানী আওড়ে গেছেন। কিন্তু রাস্তাটির উন্নয়নে কেউ কথা রাখেনি।

ঔষুধ ব্যবসায়ী মোঃ হানিফ মোল্লা জানান, একমাত্র রাস্তাটির কারনে কার্যত যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন এলাকাটি । যার দরুন এলাকার কোন মানুষজন মারা গেলে লাশ দাফনের জন্য কবরস্থানে নেওয়ার সময় সীমাহীন ভোগান্তি পোহাতে হয়। তেমনি অত্র এলাকার ছেলে মেয়েদের বিয়ের ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। এছাড়াও এ গ্রামের মানুষজন চাকরি ও ছাত্র-ছাত্রীরা স্কুল-কলেজের যেতে অর্থ ও সময় অপচয় হচ্ছে।

দশম শ্রেণীর ছাত্রী বৃষ্টি আক্তার জানায়, রাস্তার বেহাল অবস্থার জন্য আমরা শিক্ষার্থীরা সময়মতো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পৌছাতে পারিনা।

এ বিষয়ে বানিয়াজুরী ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কাশেম চতু বলেন, সীমান্তবর্তী হওয়ায় ঐ এলাকার রাস্তাটির উন্নয়ন কাজ বিঘ্নিত হচ্ছে। চলতি বছরে টিআর-কাবিখা প্রকল্পের আওতায় রাস্তায় মাটি ভরাটের কাজ করা হয়েছে। রাস্তাটি মেরামত ও সংষ্কারে বড় আকারের বাজেটের জন্য কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ জাহাঙ্গীর আলম জানান, মাননীয় এমপি মহোদয়ের মাধ্যমে ইতিমধ্যে রাস্তাটির মেরামতে ২ লক্ষ টাকার প্রকল্প পাশ হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজ শুরু হবে।