সোহরাব হোসেন, সিংগাইর (মানিকগঞ্জ) : মানিকগঞ্জের সিংগাইরে গ্রাহকদের ১০ লক্ষাধিক টাকা নিয়ে উধাও হয়ে গেছে ব্যবসায়ী সঞ্চয় সমিতি গাজী গ্রুপ নামের একটি এনজিও। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী সদস্যরা থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন বলে জানা গেছে।
পৌর এলাকার গোবিন্দল নতুন বাজার বাসস্ট্যান্ডের পূর্বপাশে ব্যবসায়ী সঞ্চয় সমিতি গাজী গ্রুপ নামের ওই অফিসে গিয়ে দেখা যায়, অফিস তালাবদ্ধ। এ সময় ১৫-২০ জন গ্রাহককে অফিসের বাইরে নীচ তলায় হা-হুতাশ করতে দেখা যায়। তাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, চলতি মাসের শুরুতে প্রতিষ্ঠানটির উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা পরিচয়ে দু’ব্যক্তি ওই মহল্লার আব্দুস ছাত্তারের বাড়ির দ্বিতীয় তলা ভাড়া নেয়। এরপর তারা একটি জরুরী নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে ছাত্তারের কলেজ পড়–য়া বোন ঝর্না আক্তারকে সাথে নিয়ে প্রাইভেটকারযোগে (ঢাকা মেট্রো-গ-২৯-০৭৮৩) ঋন কার্যক্রমের প্রচারণা চালায়। পাশাপাশি মোটা অংকের ঋন দেয়ার কথা বলে প্রায় ৪০ জন গ্রাহকের কাছ থেকে জনপ্রতি ১০ থেকে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত জমা নেয়া হয়। উপজেলার বিভিন্ন এলাকার লোকজনের কাছ থেকে সঞ্চয় সংগ্রহ করে তারা। ১১ ডিসেম্বর সবাইকে লোন দেয়ার তারিখ নির্ধারন করা হয়। এ ভাবেই তারা ১০ লক্ষ টাকার উপরে সঞ্চয় আদায় করে। ১০ ডিসেম্বর থেকে তারা মোবাইল ফোন বন্ধ কওে দেয়। ১১ ডিসেম্বর সদস্যরা লোন তুলতে এসে দেখেন অফিস তালাবদ্ধ। এ সময় বাড়ির মালিকপক্ষ থেকে জানানো হয় তারা পালিয়ে গেছে। গোবিন্দল ভোর বাজার এলাকার গ্রাহক কুলসুম জানান, তাদের স্বামী-স্ত্রীর কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা ঋন দেয়ার কথা বলে ৫০ হাজার টাকা সঞ্চয় হাতিয়ে নেয়। অনুরুপ অভিযোগ করেন ধল্লা ইউনিয়নের বাস্তা গ্রামের মনোয়ার হোসেন, দলিল উদ্দিন, গোবিন্দল গ্রামের আল আমীন, ইফাজুদ্দিন, সাহানা ও ছালমাসহ অনেকেই। এ ঘটনায় গ্রাহকদের পক্ষ থেকে জয়মন্টপ ইউনিয়নের পশ্চিম ভাকুম গ্রামের কাশেম মোল্লার পুত্র মহিউদ্দিন মোল্লা থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন । মহিউদ্দিন জানান, আমি ও আমার গ্রামের ৪ জনের কাছ থেকে ঝর্না আক্তার কোম্পানীর দু’কর্মকর্তার উপস্থিতিতে ১ লাখ টাকা নেন। তাছাড়া এ রকম অনেকের কাছ থেকেই ঋন দেয়ার নাম করে টাকা পয়সা হাতিয়ে নেয়া হয়েছে।
গত মঙ্গলবার (১৫ ডিসেম্বর) ব্যবসায়ী সঞ্চয় সমিতি গাজী গ্রুপের অফিসে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে দেয়া তাদের ০১৭৪৮৭৯৫৩৪৫ নম্বরে ফোন দিলে মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। সাংবাদিক এসেছে এমন খবরে ২০ জনের অধিক গ্রাহক তাদের পাশ বই নিয়ে উপস্থিত হন। বাড়ির মালিক আব্দুস ছাত্তার ও তার কলেজ পড়–য়া বোন ঝর্না আক্তারের সঙ্গে প্রতারক চক্রের যোগ সাজশ আছে বলে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন। কিন্তু তা অস্বীকার করেন অভিযুক্ত কথিত ক্যাশিয়ার পদধারী ঝর্না আক্তার। তিনি বলেন, জাতীয় পরিচয়পত্র ও ষ্ট্যাম্পের জন্য ৭ দিনের সময় চেয়ে মাসিক ৬ হাজার টাকায় আমাদের বাড়ি ভাড়া নিয়েছিল। ৯ দিন অবস্থান করে ১১ ডিসেম্বর উদ্বোধনের আগের দিন প্রতারক চক্র পালিয়ে গেছে। আমরা পরিস্থিতির শিকার।
সিংগাইর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ রকিবুজ্জামান বলেন, দলবদ্ধভাবে থানায় লোকজন এসেছিল, তাদেরকে লিখিত অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।