সরকারী গভীর নলকূপের ৪টি সংযোগের ৩টি বিদ্যমান। আর আনোয়ারা বেগমেরটি কাটা অবস্থায় পড়ে আছে। ইনসেটে বৃদ্ধা আনোয়ারা। ছবি: প্রতিনিধি

কুলাউড়া (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি : কুলাউড়ায় সরকারী ডিপটিবওয়েলের পানি থেকে এক বৃদ্ধার পরিবারকে বঞ্চিত করা হয়েছে। গত দেড়মাস থেকে পানির লাইন কেটে দেওয়ায় চরম পানির সংকটে পড়েছেন ষাটোর্ধ আনোয়ারা বেগম ও তার ৬ সদস্যের পরিবার। গভীর নলকূপের পানি না পেয়ে পার্শ্ববর্তী ছড়ার দূষিত পানি পান করে ডায়রিয়াসহ অন্যান্য রোগের শিকার হচ্ছেন তারা। যদিও গত ২ বছর থেকে ঐ গভীর নলকূপ থেকে আনোয়ারা বেগম পাইপ লাইনের মাধ্যমে পানি ব্যবহার করে আসছিলেন। বিষয়টির প্রতিকার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে লিখিত আবেদন করা হয়েছে।

আবেদন সূত্রে জানা যায়, গত দেড়মাস পূর্বে বাড়ির সামনের রাস্তা নিয়ে দু’পক্ষের বিরোধ শুরু হলে প্রতিবেশি বিলাল ও রুহুল আমিন গংরা মিলে আনোয়ারা বেগমের পানির সংযোগ লাইনের পাইপ কেটে নিয়ে যায়।

অবশ্য পুলিশি হস্তক্ষেপে রাস্তার বিরোধ নিষ্পত্তি হয়েছে ইতিমধ্যে। কিন্তু রাস্তার জেরের কারণে নিরীহ বৃদ্ধা আনোয়ারা বেগমকে পানি ব্যবহারে বাধা দিচ্ছেন বিলাল মিয়া ও তার ভাই ভাতিজারা।

ফলে বৃদ্ধা আনোয়ারা বেগম বাধ্য হয়ে পাশ^বর্তী ছড়া ও অন্য মানুষের পুকুরের দুষিত পানি পান করতে হচ্ছে দেড়মাস থেকে।

বৃদ্ধা আনোয়ারা বেগম বলেন, রমজান মামে পানির জন্য চরম কষ্ট করেছি। ছড়ার দূষিত পানি পান করে ডায়রিয়া হওয়ার কারনে আমার পরিবারের সকল সদস্য কয়েকদিন অসুস্থ হয়ে পড়েছিলাম। ২দিন রোজা রাখতে পারিনি।

তিনি আরও বলেন, প্রায় ২০/২৫ হাজার খরচ হয়েছে সরকারী গভীর নলকুপ স্থাপনে। আমিসহ ৫টি পরিবার পানি খাওয়ার জন্য সকলের সম্মতিতে আমার প্রতিবেশী হায়দর আলীর জায়গায় গভীর নলকুপ বসানো হয়। ৪ জনই পাইপ দিয়ে নিজ নিজ ঘরে পানির সংযোগ নিয়ে পানি ব্যবহার করে আসছেন। কিন্তু বাকি ৩ জন পানি পাইপের মাধ্যমে ব্যবহার করতে পারলেও বিলাল মিয়া ও রুহুল আমিন আমার সংযোগ কেটে দেওয়ার কারনে আমি সরকারী গভীর নলকুপের পানি থেকে বঞ্চিত হয়ে বর্তমানে ছড়ার দূষিত পানি ফুটিয়ে খেয়ে জীবন যাপন করছি।

এদিকে বৃদ্ধা আনোয়ারা বেগম গত ২৪ এপ্রিল কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে সরকারী গভীর নলকুপের পানি থেকে বঞ্চিত হওয়ার বিয়টি লিখিতভাবে অবহিত করেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।

এদিকে সরকারী গভীর নলকুপের পাইপ লাইন কাটার দায়ে অভিযুক্ত বিলাল মিয়া ও রুহুল আমিন বলেন,আমাদের জায়গার উপর দিয়ে এতদিনে বৈদ্যুতিক লাইন ও পানির লাইন ছিল। এরজন্য পাইপ কেটে দিয়েছি। তবে বিকল্প উপায়ে পানি নিলে আমাদের কোন আপত্তি নেই। ২ বছর কেনো বাধা দিলেননা এ প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে যান তারা।

এ ব্যাপারে কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ টিএম ফরহাদ চৌধুরী জানান,আমি লিখিত অভিযোগ পেয়ে সদর ইউপির চেয়ারম্যানকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য বলেছি।