আহমেদ বায়েজীদ : ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি মন্দিরের আশপাশের মুসলিম বাসিন্দাদের উচ্ছেদের জন্য চাপ দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এর ফলে পিতৃপুরুষের ভিটা থেকে বিতাড়িত হওয়ার শঙ্কায় রয়েছে ডজনখানেক পরিবার।

রাজ্যের গোরাকপুর জেলার গোরাকনাথ মন্দিরের পার্শবর্তী এলাকার এক বাসিন্দা আল জাজিরাকে জানিয়েছেন, সম্প্রতি পুলিশ সহ স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা একদিন তার বাড়ি ও আশপাশের জমিগুলো পরিদর্শনে আসে। পরদিন তাকে একটি সম্মতি পত্রে স্বাক্ষর করতে বলা হয়, যাতে লেখা ছিলো স্বেচ্ছায় বাড়ি ও জমি সরকারের কাছে হস্তান্তর করতে রাজি আছেন। মন্দির প্রাঙ্গনের নিরাপত্তার জন্য এটি করা হচ্ছে বলেও ওই নথিতে উল্লেখ ছিলো। প্রশাসন এমন পদক্ষেপ নিলে বাড়ির মালিকদের কোন আপত্তি থাকবে না বলেও তাতে লেখা ছিলো।

মন্দিরটির কাছাকাছি বাস করছে এমন প্রায় এক ডজন বাড়ির মালিককে এই অনুমতি পত্রে স্বাক্ষর করতে বলা হয়েছে। এই পরিবারগুলো সব মুসলিম সম্প্রদায়ের। বাড়ি ও সম্পত্তির জন্য তাদের ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে বলেও আশ্বাস দেয়া হয়েছে। যদিও বাসিন্দারা তাদের পৈত্রিক ভিটা ছাড়তে রাজি নন।

এক বাসিন্দা বলেন, কর্মকর্তারা আমাদের বলেছে যদি স্বাক্ষর না করি তবে তারা অন্য ব্যবস্থা নেবে। আমাদের চাপ দিয়েই এই স্বাক্ষর নেয়া হয়েছে।

আরেক বাসিন্দা জানিয়েছেন, মন্দিরের নিরাপত্তার জন্য তার বাড়িটি অধিগ্রহণ করা হবে বলে তাকে মৌখিকভাবে জানানো হয়েছে।

উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ও কট্টর ডানপন্থী বিজেপি নেতা যোগী আদিত্যনাথ নিজেই ওই মন্দিরের প্রধান পুরোহিত। মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার আগে যোগী ওই আসনটি থেকে একাধিকবার এমপি নির্বাচিত হয়েছেন।

২২০ মিলিয়ন মানুষের উত্তর প্রদেশে ২০ শতাংশ মুসলিম। ২০১৪ সালে রাজ্যটিতে বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর থেকেই সেখানে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা বেড়ে চলেছে। গত মাসেও রাজ্যের বারাবাঙ্কি জেলায় ১০০ বছরের পুরনো একটি মসজিদ গুড়িয়ে দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।

এদিকে করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় ভ্যাকসিন পাসপোর্ট চালুর বিরোধীতা করছে ভারত। দেশত্যাগের জন্য পাসপোর্টে ভ্যাকসিন নেয়ার তথ্য বাধ্যতামূলক করার প্রস্তাবের প্রসঙ্গে দেশটি নিজেদের এই অবস্থান জানিয়েছে। বিশে^র সম্পদশালী ৭টি দেশের জোট জি-সেভেনের স্বাস্থ্যমন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনে অতিথি হিসেবে আমন্ত্রিত হয়ে একথা বলেন ভারতের স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধন।

বিশাল জনসংখ্যার দেশ ভারত তার জনসংখ্যার মাত্র ৩ শতাংশকে ভ্যাকসিন দিতে পেরেছে। এনডিটিভি অনলাইনের খবরে বলা হয়েছে, ভারতীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধন ভ্যাকসিনের সহজপ্রাপ্যতা এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোতে ভ্যাকসিন দেয়ার নিম্ন হার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

তিনি বলেন, মহামারীর এই পর্যায়ে ভ্যাকসিন পাসপোর্ট চালু করার প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে ভারতের উদ্বেগ রয়েছে। উন্নত দেশগুলোর তুলনায় উন্নয়নশীল দেশগুলোতে ভ্যাকসিন দেয়ার হার কম। এছাড়া ভ্যাকসিনের সরবরাহ, বন্টন ও সহজলভ্যতা নিয়েও আলোচনা হচ্ছে না। তাই ভারত মনে করে এই সময়ে ভ্যাকসিন পাসপোর্ট চালু করা হবে বৈষম্যমূলক সিদ্ধান্ত। যা উন্নয়নশীল দেশগুলোর নাগরিকদের জন্য অসুবিধা তৈরি করবে।