খোলাবার্তা২৪ ডেস্ক : ইন্দোনেশিয়ার পূর্বাঞ্চলে এক শহরে একটি ফুটবল ম্যাচকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে কমপক্ষে ১২৯ জন নিহত হয়েছে। সংঘর্ষ থামাতে পুলিশ টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করে। এ সময় হুড়োহুড়ি করে বের হতে গিয়ে পদদলিত হয়ে বেশীরভাগ সমর্থকের মৃত্যু হয়।

শনিবার সন্ধ্যায় ইন্দোনেশিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় শহর মালাংয়ে স্বাগতিক আরেমা এফসি ৩-২ গোলে সুরাবায়ার ক্লাব পারসেবায়ার কাছে হেরে গেলে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়।

পরাজয়ের হতাশা থেকে আরেমেনিয়ার সমর্থকরা খেলোয়াড় ও কর্মকর্তাদের দিকে বোতলসহ অন্যান্য বিভিন্ন জিনিস ছুঁড়তে থাকে। এমনকি প্রতিবাদের এক পর্যায়ে তারা কানজুরুহান স্টেডিয়ামের মাঠে প্রবেশ করে আরেমার কর্তৃপক্ষের বিপক্ষে স্লোগান দিতে থাকে। ধীরে ধীরে এই বিক্ষোভ স্টেডিয়ামের বাইরে ছড়িয়ে পড়ে।

একপর্যায়ে উশৃঙ্খল সমর্থকরা পুলিশের পাঁচটি যানবাহন ভাঙচুর করে। সংঘর্ষ এতটাই ভয়াবহ রূপ নেয় যে পুলিশ টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করতে বাধ্য হয়।

এ সময় বিক্ষুব্ধ জনতা দৌড়ে স্টেডিয়ামের বাইরে আসতে চাইলে পদদলিত হয়ে বেশীরভাগের মৃত্যু হয়েছে, অনেকেই শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা গেছেন। স্টেডিয়ামের ভিতর ৩৪ জন মারা গেছেন যাদের মধ্যে দুজন পুলিশ কর্মকর্তা রয়েছে বলে স্থানীয় পুলিশ নিশ্চিত করেছে। বাকিরা হাসাপাতালে নেবার পর মৃত্যুবরণ করেছেন।

এদিকে এ ঘটনার জন্য ক্ষমা চেয়েছেন ইন্দোনেশিয়া সরকার। বিষয়টি তদন্তের আশ্বাস দিয়েছে তারা।

দেশটির যুব ও ক্রীড়ামন্ত্রী জাইনুদিন আমালি বলেন, দুঃখজনক এ ঘটনা এমন সময় ঘটল, যখন ফুটবলের ভক্ত-সমর্থকরা স্টেডিয়ামে গিয়ে খেলা দেখার সুযোগ পাচ্ছেন।

ইস্ট জাভা পুলিশেল প্রধান নিকো আফিন্তা রোববার সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, পুলিশের উপর আক্রমন চালানোর কারণে আমরা শেষ পর্যন্ত টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপের সিদ্ধান্ত নেই। তার আগে যথাযথ ভাবেই তাদের প্রতিরোধ করার চেষ্টা করা হয়েছিল।

সংঘর্ষের ঘটনায় আহত ৩০০রও বেশী মানুষকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আফিন্তা জানিয়েছেন মৃত্যুর সংখ্যা হয়তো আরো বাড়তে পারে। কারণ আহতদের মধ্যে প্রায় ১৮০ জনকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
ইতোমধ্যেই ইন্দোনেশিয়ান সকার এসোসিয়েশন প্রিমিয়ার সকার লিগ লিগা ১ অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত ঘোষণা করেছে। একইসাথে মৌসুমের বাকি সময়টা আরেমাকে আর কোন ম্যাচ আয়োজনের সুযোগ দেয়া হবে না বলেও বিবৃবিতে জানিয়েছে।

এদিকে মালাংয়ের স্থানীয় পুলিশ প্রধান ফেরলি হিদায়াত বলেছেন, গতকাল স্টেডিয়ামে উপস্থিত প্রায় ৪২ হাজার সমর্থকদের মধ্যে বেশীরভাগই আরেমানিয়াস ছিল। কারন যেকোন ধরনের সংঘর্ষের ঘটনা এড়াতে আয়োজকরা পারসেবায়ার সমর্থকদের স্টেডিয়ামে প্রবেশে নিষিদ্ধ করেছিল।