মোঃ কামরুজ্জামান ভূঁইয়া, নোয়াখালী : নোয়াখালীর হাতিয়ার মেঘনা নদীতে নলেরচর থেকে ভোলার মনপুরা যাওয়ার পথে ডালচর এলাকায় বরযাত্রীবাহী ট্রলার ডুবির ঘটনায় আরো এক শিশুর লাশ উদ্ধার হয়েছে।
শুক্রবার দুপুর ৩টার দিকে হাতিয়ার টাংকির চর সংলগ্ন নদী থেকে হাছান (৭)কে কোস্টগার্ড দক্ষিণ জোন (ভোলা) এর ডুবুরি দল, কোস্টগার্ড স্টেশন হাতিয়া এবং স্টেশন রামগতি কর্তৃক চলমান সার্চ এন্ড রেসকিউ কার্যক্রমে লাশটি উদ্ধার করে।
শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৪টায় সার্চ এন্ড রেসকিউ দলের নেতৃত্বে থাকা হাতিয়া কোস্টগার্ডের স্টেশন কমান্ডার লেফটেন্যান্ট এস এম তাহসিন রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, ওই দুর্ঘটনার পর থেকে এখনো নিখোঁজ রয়েছে ৭ জন। তবে এখন পর্যন্ত ৩ দাফে ৮টি লাশ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নববধু ,নারী ও শিশুসহ ৭ জনের লাশ উদ্ধার করা হলেও ৮ জন নিখোঁজ ছিল। শুক্রবার হাছানের লাশ উদ্ধারে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৮ এ দাঁড়িয়েছে। এখনো নিখোঁজরা হলেন, জাকিয়া বেগম (৫৫) ,নার্গিস বেগম (৪), হালিমা (৪), লামিয়া (৩), নিহা (১), আমির হোসেন (২) ও আলিফ (১)।
জানা যায়, মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় হাতিয়ার নলের চরে বিয়ে অনুষ্ঠান শেষে নববধু নিয়ে বরসহ ট্রলার যোগে ভোলার মনপুরা যাওয়ার পথে ট্রলারটি ডালচর এসে পৌছঁলে মেঘনা নদীর তীব্র ¯্রােতের মুখে পড়ে ট্রলারটি ডুবে যায়। এতে ৮ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত ৮ জন হলেন- হাতিয়ার চানন্দী ইউনিয়নের থানার হাট এলাকার ইব্রাহীম সওদাগরের মেয়ে নববধু তাছলিমা (২০), হরণী ইউনিয়নের মোহম্মদপুর গ্রামের আক্তার হোসেনের মেয়ে আসমা বেগম (১৯), সদর উপজেলার বদরপুর গ্রামের আকবর হোসেনের মেয়ে আফরিনা আক্তার লামিয়া (৯), একই এলাকার আলমগির হোসেনের মেয়ে লিলি আক্তার (৮), নলেরচরের কালাদুর গ্রামের ফয়জ্জুল্লার মেয়ে হোসনে আরা বেগম (৫), চানন্দী ইউনিয়নের পূর্ব আজিম নগর গ্রামের আলা উদ্দিনের স্ত্রী রাহেনা বেগম (৩০), একই এলাকার খোরশেদ আলমের স্ত্রী নুরজাহান (৬৫), হাতিয়ার চানন্দী ইউনিয়নের আব্দুল কাদেরের ছেলে হাছান (৭)।
হাতিয়ার ডালচরে ট্রলার ডুবির এ ঘটনা ঘটলেও প্রবল সোতে ৫টি লাশ ভেসে যায় লক্ষ্মীপুর জেলার রামগতিতে। জেলেরা নদীতে ভাসমান লাশগুলো ভাসতে দেখে তাদের উদ্ধার করে টাংকির ঘাটে নিয়ে আসে। পরে তারা রামগতি থানা পুলিশকে কে খবর দেয়। অপরদিকে ২টি লাশ পাওয়া যায় চানন্দি ঘাটে। ট্রলারটি ডুবে যাওয়ার পরে অনেকে সাঁতার কেটে ও অন্য ট্রলারের সহযোগীতায় তীরে উঠতে সক্ষম হলেও শিশুসহ ৮ জন নিখোঁজ ছিল। নিহত নববধুর পিতা ইব্রাহীম সওদাগর জানায়, তার মেয়ে তাছলিমার সাথে হাতিয়ার ঢালচরের বেলাল মেস্তুরীর ছেলে ফরিদ উদ্দিনের বিবাহ হয়। মঙ্গলবার তাছলিমাকে আনুষ্ঠানিক ভাবে বরের বাড়ীতে নেওয়ার পথে এই দুর্ঘটনা ঘটে।