খোলাবার্তা ডেস্ক : আজ ১৮ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস। বাংলাদেশে এবার ‘মুজিববর্ষের আহ্বান, দক্ষ হয়ে বিদেশ যান’ এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে সারাদেশে নানা কর্মসূচির মাধ্যমে আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস পালন করা হবে।

অভিবাসী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থানকারী সকল অভিবাসীসহ দেশে-বিদেশে অভিবাসীদের কল্যাণে ব্যাপৃত সব ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনকে শুভেচ্ছা জানিয়ে পৃথক বাণী দিয়েছেন।

বর্তমান সরকার বৈদেশিক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি, অভিবাসী কর্মীগণের কল্যাণ ও স্বার্থসংরক্ষণ, তাদের অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রার সর্বোত্তম ব্যবহার ও তাদের পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।

২০১৯-২০ অর্থবছরে প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রেরিত রেমিট্যান্সের পরিমাণ পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় ১০ দশমিক ৯০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ১৮ দশমিক ২১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে। কোভিড-১৯ এর কারণে দেশে প্রত্যাগত অভিবাসী কর্মী ও তাদের পরিবারকে সহজ শর্তে বিনিয়োগ ঋণ প্রদান এবং তাদের জন্য রিইন্টিগ্রেশন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে এ লক্ষ্যে সাতশত কোটি টাকার তহবিল গঠন করে তা থেকে ঋণ প্রদান কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

এদিকে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ বলেছেন, অভিবাসী কর্মীরা দেশে-বিদেশে কোথাও কোনোভাবে যেন হয়রানির শিকার না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে। তিনি আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস উপলক্ষে আজ এক বাণীতে এ কথা বলেন।

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে প্রতিবারের ন্যায় এ বছরও আগামীকাল শুক্রবার (১৮ ডিসেম্বর) ‘আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস ২০২০’ পালিত হচ্ছে জেনে সন্তোষ প্রকাশ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবসে আমি বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে বসবাসরত অভিবাসী বাংলাদেশিদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য ‘মুজিববর্ষের আহ্বান, দক্ষ হয়ে বিদেশ যান’ অত্যন্ত সময়োপযোগী হয়েছে বলেও তিনি মনে করেন।

আবদুল হামিদ বলেন, প্রাচীণকাল থেকেই জীবিকার সন্ধান, আর্থ-সামাজিক, জলবায়ু পরিবর্তনসহ নানা কারণে মানুষ পাড়ি জমাচ্ছে দেশ থেকে দেশান্তরে। বর্তমানে বাংলাদেশের এক কোটির অধিক মানুষ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অভিবাসী হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। তাঁরা গন্তব্য দেশের অবকাঠামো উন্নয়ন, অর্থনৈতিক সমৃদ্ধ অর্জন ছাড়াও নিজ দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন। একইসাথে পরিবার-পরিজনের জীবন জীবিকা নির্বাহ এবং তাঁদের পারিবারিক ও সামাজিক জীবনমান উন্নয়নেও তাঁরা বিশেষ অবদান রাখছেন। তাঁদের পাঠানো রেমিট্যান্স জাতীয় অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি। দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে তাঁরাও গর্বিত অংশীদার। তাঁদের অবদানের কথা রাষ্ট্রপতি শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন।

আবদুল হামিদ বলেন, সারাবিশ্বে করোনা মহামারি পরিস্থিতি আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। অভিবাসী কর্মীরা মহামারির মধ্যেও রেকর্ড পরিমাণ রেমিটেন্স প্রেরণের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিকে আরো শক্তিশালী করেছে। বৈশ্বিক করোনা মহামারির বিস্তার শুরু হবার পর থেকে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় বিভিন্ন দেশে আটকে পড়া অভিবাসীদের দেশে প্রত্যাগমণ, অভিবাসী কর্মীদের খাদ্য ও আর্থিক সহায়তাসহ তাঁদের প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করেছে যা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। অভিবাসীদের প্রবাসে বাংলাদেশের ভ্রাম্যমান দূত হিসেবে আখ্যায়িত করে রাষ্ট্রপতি বলেন, দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে প্রত্যেক অভিবাসীকে গন্তব্য দেশের ভাষাজ্ঞান ও সংস্কৃতি জানার পাশাপাশি সে দেশের আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে নিজ দেশের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে তুলে ধরতে হবে। দক্ষ জনশক্তি গঠন, বৈদেশিক কর্মসংস্থান, নিরাপদ অভিবাসন, মূল্যবান রেমিটেন্স আহরণ এবং প্রবাসী কর্মীদের কল্যাণসহ অভিবাসন ব্যবস্থাপনার সার্বিক উন্নয়নে সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক প্রচেষ্টা চালানোর জন্যও তিনি সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহবান জানান।

তিনি ‘আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস ২০২০’ উপলক্ষে গৃহীত সকল কর্মসূচির সফলতা কামনা কর।